লিভার আমাদের দেহে বিপাক, টক্সিন অপসারণ, শক্তি সঞ্চয় এবং
পাচন সহ বহু গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। কিন্তু অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, অতিরিক্ত চিনি, অ্যালকোহল বা বয়সজনিত কারণে এর কার্যক্ষমতা ধীর হয়ে যেতে পারে। প্রতিদিনের খাবারের মধ্যেই কিছু উপাদান আছে যা লিভারের ওপর চাপ বাড়ায়। নিচে এমন পাঁচটি খাবার উল্লেখ করা হলো, যেগুলো লিভারের ক্ষতি দ্রুত বাড়াতে পারে।
১) পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট ও সাদা ময়দার খাবার
সাদা ভাত, পাস্তা বা ময়দার রুটি খুব দ্রুত শরীরে গ্লুকোজে রূপান্তরিত হয়। এতে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যায় এবং লিভারকে অতিরিক্ত চিনিকে চর্বিতে পরিণত করতে বাধ্য করে। এভাবে নিয়মিত এসব খাবার খেলে লিভারে চর্বি জমে NAFLD হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। এর বদলে ব্রাউন রাইস, ওটস বা সম্পূর্ণ শস্যজাতীয় খাবার লিভারের জন্য উপকারী।
২) অতিরিক্ত চিনি ও চিনিযুক্ত পানীয়
কর্কশ পানীয়, মিষ্টি জুস, কেক বা ক্যান্ডিতে থাকা সুক্রোজ ও ফ্রুক্টোজ লিভারের ওপর তাৎক্ষণিক চাপ সৃষ্টি করে। গবেষণা বলছে—কম পরিমাণে হলেও নিয়মিত চিনি খেলে লিভারে চর্বি দ্বিগুণ হারে জমতে পারে। যারা প্রতিদিন সফট ড্রিংক পান করেন, তাদের লিভার ফ্যাটের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি দেখা যায়।
৩) অ্যালকোহল
অতিরিক্ত অ্যালকোহল লিভারের সবচেয়ে বড় শত্রু। দীর্ঘদিন অতিরিক্ত মদ্যপান করলে লিভারে চর্বি জমে, পরে প্রদাহ সৃষ্টি হয় এবং ধীরে ধীরে সিরোসিস বা স্থায়ী লিভার ক্ষতি হতে পারে। অ্যালকোহল ভাঙ্গার সময় লিভারে বিষাক্ত যৌগ তৈরি হয়, যা কোষকে নষ্ট করে দেয়।
৪) ভাজা খাবার ও ফাস্ট ফুড
গভীর তেলে ভাজা খাবারে ট্রান্সফ্যাট বেশি থাকে, যা দ্রুত লিভারে ফ্যাট জমতে সাহায্য করে। ফাস্ট ফুডে চিনি, চর্বি ও লবণের পরিমাণ বেশি হওয়ায় এটি লিভার স্বাস্থ্যের জন্য আরও ক্ষতিকর। গবেষণায় দেখা যায়—যাদের প্রতিদিনের খাদ্যের ২০% ফাস্ট ফুড, তাদের লিভার ফ্যাট স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি থাকে।
৫) প্রক্রিয়াজাত মাংস ও প্যাকেটজাত খাবার
হট ডগ, সসেজ, বেকন বা অন্যান্য প্রক্রিয়াজাত মাংসে স্যাচুরেটেড ফ্যাট, প্রিজারভেটিভ ও নাইট্রাইট থাকে, যা লিভারের প্রদাহ বাড়াতে পারে। নিয়মিত এসব খাবার খেলে ফ্যাটি লিভার এবং ফাইব্রোসিসের ঝুঁকি বাড়ে। এছাড়া এগুলো অন্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়াও ক্ষতিগ্রস্ত করে। এর পরিবর্তে ডাল, মসুর বা উদ্ভিজ্জ প্রোটিন নিরাপদ বিকল্প।
এসআর
মন্তব্য করুন: