[email protected] শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫
১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

শীতকালে ফুসফুস ভালো রাখবে এই পানীয়

প্রতিদিনের বাংলা ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩ নভেম্বর ২০২৫ ১১:৩৩ পিএম

শীতকাল এলেই বাতাসে ধুলো, ধোঁয়া ও সূক্ষ্ম কণার (PM2.5, নাইট্রোজেন অক্সাইড)

পরিমাণ বেড়ে যায়। এই দূষিত উপাদানগুলো ফুসফুসের গভীরে প্রবেশ করে কাশি, শ্বাসকষ্ট এবং দীর্ঘমেয়াদে শ্বাসযন্ত্রের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই অনেকে এখন পুরোনো প্রাকৃতিক পদ্ধতিগুলোর দিকে ফিরছেন। এর মধ্যে একটি সহজ কিন্তু কার্যকর উপায় হলো — গরম পানিতে গুড় মিশিয়ে পান করা।

কেন গুড় ফুসফুসের জন্য উপকারী

গুড় হচ্ছে আখের রস থেকে তৈরি অপরিশোধিত চিনি, যা আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়ামসহ নানা খনিজ পদার্থে সমৃদ্ধ। এসব উপাদান রক্ত পরিশোধন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও শ্বাসযন্ত্রের পরিশোধন প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে। প্রাচীনকাল থেকেই গুড়কে গলার জ্বালা ও কাশি প্রশমনে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

হালকা গরম পানিতে গুড় মিশিয়ে খেলে এটি প্রাকৃতিক কফনাশক হিসেবে কাজ করে— শ্বাসনালীর শ্লেষ্মা আলগা করে ও নির্গমনে সহায়তা করে। যারা প্রতিদিন ধুলো বা ধোঁয়ার সংস্পর্শে থাকেন, তাদের জন্য এটি বিশেষভাবে উপকারী হতে পারে।

আধুনিক গবেষণার প্রমাণ

আধুনিক পুষ্টি গবেষণায় দেখা গেছে, গুড় মিউকোসিলিয়ারি ক্লিয়ারেন্স প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করে। এটি ফুসফুসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, যা ধুলো, অ্যালার্জেন এবং দূষিত কণাকে আটকে ও বের করে দিতে সহায়তা করে। গুড় শ্লেষ্মা উৎপাদন বাড়িয়ে এবং লিম্ফ চলাচল উন্নত করে এই প্রক্রিয়াকে আরও কার্যকর করে তোলে।

লখনউয়ের ইন্ডাস্ট্রিয়াল টক্সিকোলজি রিসার্চ সেন্টার পরিচালিত এক পরীক্ষায় দেখা যায়— কয়লার ধুলোর সংস্পর্শে আসা ইঁদুরদের মধ্যে যারা গুড় খেয়েছিল, তাদের ফুসফুস ও লিম্ফ নোড থেকে ধূলিকণা অপসারণের হার ছিল বেশি। সেই গবেষণায় আরও দেখা যায়, গুড় ফুসফুসের টিস্যুর ক্ষতি ও ফাইব্রোসিস কমিয়ে অঙ্গের প্রাকৃতিক স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখতে সহায়তা করে।

গবেষকরা অনুমান করেছেন, গুড়ের সিয়ালিক অ্যাসিড নামক যৌগটি শ্বাসযন্ত্রে ঋণাত্মক চার্জ সৃষ্টি করে, যা ধনাত্মক চার্জযুক্ত ধুলো ও ধোঁয়া কণাগুলোকে আকর্ষণ করে এবং দ্রুত শরীর থেকে বের করে দেয়।

সতর্কতা

যদিও গুড় মিশ্রিত গরম পানি প্রাকৃতিকভাবে শ্বাসযন্ত্র পরিষ্কারে সহায়ক, এটি কখনোই চিকিৎসার বিকল্প নয়। যদি কাশি বা শ্বাসকষ্ট দীর্ঘস্থায়ী হয়, অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

 

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর