অনেকেই সকালে ঘুম থেকে উঠেই ক্লান্তি অনুভব করেন। ঘুম থেকে উঠেও যেন শরীর-মন ফ্রেশ লাগে না — এমন অভিযোগ বেশ সাধারণ।
এই অবস্থা শুধু শারীরিক নয়, মানসিক ক্লান্তিরও ইঙ্গিত হতে পারে। ঘুম ভাঙার পর যদি শরীর ভারী মনে হয়, বিছানা ছাড়তে কষ্ট হয়, মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে বা কাজের আগ্রহ কমে যায়, তবে সেটি ‘মর্নিং ফ্যাটিগ’ বা সকালবেলার ক্লান্তি হিসেবে পরিচিত।
কেন হয় এমন ক্লান্তি
সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো পর্যাপ্ত বা মানসম্মত ঘুমের অভাব। রাতে শরীর পর্যাপ্ত বিশ্রাম না পেলে সকালে তার প্রভাব স্পষ্ট হয়। মানসিক চাপ, উদ্বেগ বা অতিরিক্ত চিন্তাও ঘুমের মান নষ্ট করে। কেউ কেউ মাঝরাতে বারবার জেগে ওঠেন, যা ঘুমের স্বাভাবিক চক্র ব্যাহত করে।
এছাড়া পুষ্টির ঘাটতিও বড় ভূমিকা রাখে — বিশেষ করে প্রোটিন, আয়রন, সোডিয়াম ও ভিটামিন ডি-র অভাবে এমন সমস্যা দেখা দিতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে হরমোনের অসামঞ্জস্য, যেমন থাইরয়েড সমস্যা বা ডায়াবেটিসও এর কারণ হতে পারে। এমনকি হৃদ্রোগ, রক্তশূন্যতা বা অনিয়মিত জীবনযাপনও সকালে অজানা ক্লান্তি ডেকে আনতে পারে।
রাতে দেরিতে ঘুমানো, অতিরিক্ত চা–কফি খাওয়া বা প্রাতঃরাশ বাদ দেওয়ার অভ্যাসও শরীরের স্বাভাবিক শক্তির ভারসাম্য নষ্ট করে দেয়।
কী করবেন
প্রতিদিন অন্তত ৬–৮ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করুন।
ঘুমানোর আগে মোবাইল, টিভি বা অন্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার কমান।
সকালে নাশতায় ডিম, দুধ, ওটস, ফল ও শস্যজাতীয় খাবার রাখুন।
প্রতিদিন অন্তত ১৫–২০ মিনিট হাঁটুন বা হালকা ব্যায়াম করুন।
পর্যাপ্ত পানি পান করুন, যাতে শরীরে পানিশূন্যতা না হয়।
যদি এসব নিয়ম মেনে চলার পরও ক্লান্তি না কমে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
শেষ কথা
সকালের ক্লান্তি অনেক সময় আমাদের অতিরিক্ত চাপ, অনিয়মিত ঘুম ও মানসিক অস্থিরতার প্রতিফলন। সময়মতো ঘুম, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত ব্যায়াম এই সমস্যা অনেকটাই কমাতে পারে। সচেতনতা ও সামান্য অভ্যাসের পরিবর্তনেই সকালটা হতে পারে আরও প্রাণবন্ত, মনোযোগী ও সতেজ।
এসআর
মন্তব্য করুন: