দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো শুরু হয়েছে জাতীয় টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি।
গত ১২ অক্টোবর রাজধানীর আজিমপুরে স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানায় আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মাধ্যমে কর্মসূচির যাত্রা শুরু হয়।
৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী প্রায় ৫ কোটি শিশুকে টিকার আওতায় আনা এ কর্মসূচির লক্ষ্য। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) পর্যন্ত ১ কোটি ৭০ লাখ শিশুকে টাইফয়েড টিকা দেওয়া হয়েছে। আগামী ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে এই টিকাদান কার্যক্রম।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একশ্রেণির ব্যক্তি এই টিকা নিয়ে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালাচ্ছে— কেউ বলছে টিকাটির “পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে” বা “শিশুদের জন্য ক্ষতিকর”। তবে মাঠপর্যায়ের অভিজ্ঞতা বলছে, এসব দাবি ভিত্তিহীন।
টিকা নেওয়া অধিকাংশ শিশুর মধ্যে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। বেশিরভাগই জানিয়েছে, ইনজেকশন নেওয়ার সময় সামান্য ব্যথা অনুভূত হলেও পরবর্তী সময়ে একদম স্বাভাবিক ছিল তারা।
বেইলি রোডের ভিকারুন্নেসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী আইজা ওয়াজিহা তারাশা (৮) বলেন,
“টিকা নেওয়ার সময় একটু ব্যথা লেগেছিল, কিন্তু এখন একদম ভালো আছি। আমাদের ক্লাসে সবাই টিকা নিয়েছে— কারো কোনো সমস্যা হয়নি।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার উদয়ান উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী আহনাফ আবরার হাসান বলেন,
“আমি ১৬ অক্টোবর টিকা নিয়েছি। ইনজেকশনের সময় ব্যথা পেয়েছিলাম, কিন্তু পরের দিন থেকেই ঠিক আছি।”
আগারগাঁও তালতলায় গ্লোরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ ইংলিশ ভার্সনের প্রেপ-২ শিক্ষার্থী সার্বিক এমরান জানান,
“টিকা নেওয়ার পর কিছুক্ষণ শরীর খারাপ মনে হয়েছিল, কিন্তু বিকেলের মধ্যেই ঠিক হয়ে যাই। আমার ছোট বোন সেহরিশও (১ বছর) টিকা নিয়েছে, তারও কোনো সমস্যা হয়নি।”
মোহাম্মদপুরের ডিটার মাইন্ড মডার্ন মডেল স্কুলের পাঁচ বছর বয়সী তাওয়াফ ইবনে রাশেদ বলেন,
“ইনজেকশন দেওয়ার সময় একটু ব্যথা পেয়েছিলাম, কিন্তু পরে শরীর খারাপ লাগেনি।”
অভিভাবকরা জানিয়েছেন, যেসব শিশু আগে থেকেই হালকা ঠান্ডা বা জ্বরে ভুগছিল, তাদের মধ্যে দু’একজন টিকা নেওয়ার রাতে সামান্য জ্বর বা শরীর ব্যথা অনুভব করেছিল— তবে পরদিনই পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যায়।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, এ ধরনের হালকা প্রতিক্রিয়া স্বাভাবিক এবং উদ্বেগের কিছু নেই। টিকা সম্পূর্ণ নিরাপদ, কার্যকর এবং শিশুদের ভবিষ্যৎ স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এসআর
মন্তব্য করুন: