আজ বিশ্ব প্রিম্যাচিউরিটি ডে। বিশ্বজুড়ে অপরিণত বা প্রিম্যাচিউর
শিশুর সংখ্যা প্রতি বছরই বাড়ছে। গর্ভধারণের ৩৬ সপ্তাহ পূরণের আগেই শিশুর জন্ম হলে তাকে বিশেষ যত্ন ও পর্যবেক্ষণের প্রয়োজন হয়।
অপরিণত শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা স্বাভাবিকের তুলনায় কম থাকে। তাই সচেতনতার পাশাপাশি হাসপাতালের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও সাপোর্ট দেওয়া জরুরি। এনআইসিইউতে চিকিৎসা শেষে যখন মা–বাবা শিশুকে নিয়ে বাড়ি ফেরেন, তখন কিছু বিশেষ সতর্কতা মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একজন শিশু বিশেষজ্ঞ এসব বিষয়ে অভিভাবকদের জন্য কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।
প্রিম্যাচিউরিটি কী?
স্বাভাবিক গর্ভাবস্থার মেয়াদ প্রায় ৪০ সপ্তাহ। কিন্তু কোনো শিশু যদি ৩৭ সপ্তাহের আগেই জন্মায়, তাকে প্রিম্যাচিউর বা অপরিণত নবজাতক বলা হয়। এ সময় শিশুর অনেক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পুরোপুরি বিকশিত না থাকায় তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল থাকে। বিশেষ করে ফুসফুস ও মস্তিষ্ক বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পুরোপুরি প্রস্তুত থাকে না।
জন্মের পর এসব শিশুকে স্থিতিশীল করতে এবং সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সাধারণত নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (NICU)-এ রাখা হয়। তবে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার পর নিম্নোক্ত সতর্কতাগুলো কঠোরভাবে অনুসরণ করা প্রয়োজন—
বাড়িতে প্রিম্যাচিউর শিশুর যত্নে প্রয়োজনীয় করণীয়
১. হাত পরিষ্কার রাখা
অপরিণত শিশুর সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি বেশি। তাই শিশুকে ধরার আগে হাত ভালোভাবে সাবান দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।
২. শরীর গরম রাখা
প্রিম্যাচিউর শিশুরা নিজে থেকে দেহের তাপমাত্রা ধরে রাখতে পারে না। তাই ঘর যেন খুব ঠান্ডা না থাকে, আর শিশুকে উষ্ণ পোশাক ও কম্বলে জড়িয়ে রাখতে হবে।
৩. সংক্রমণ থেকে দূরে রাখা
অসুস্থ কেউ যেন শিশুর আশপাশে না আসে। জনসমাগমপূর্ণ স্থান থেকেও শিশুকে দূরে রাখতে হবে।
৪. সময়মতো টিকা দেওয়া
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সব টিকা সময়মতো দেওয়া খুব জরুরি। এতে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
৫. বুকের দুধ পান করানো
কমপক্ষে প্রথম ৬ মাস শিশুকে শুধু বুকের দুধ দিন। এটি অপরিণত শিশুর জন্য সবচেয়ে শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ সুরক্ষা।
৬. নিয়মিত মালিশ করা
শরীরের বিকাশ ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে প্রতিদিন হালকা মালিশ করতে পারেন। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার করা যেতে পারে।
৭. প্রোবায়োটিক সাপ্লিমেন্ট
শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দ্রুত বাড়াতে চিকিৎসকের নির্দেশে প্রোবায়োটিক দেওয়া যেতে পারে। এটি ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া কমাতেও সাহায্য করে।
৮. সকালের রোদে রাখা
প্রতিদিন কিছুক্ষণ শিশুকে হালকা সকালের রোদে রাখলে শরীরে ভিটামিন ডি তৈরি হয়, যা হাড় মজবুত করে এবং সর্দি-কাশির ঝুঁকি কমায়।
এসআর
মন্তব্য করুন: