বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহতা বাড়তে থাকায় নতুন আশা ও প্রতিশ্রুতির বার্তা নিয়ে ব্রাজিলের বেলেম শহরে শুরু হচ্ছে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ-৩০।
১০ থেকে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে এবারের সম্মেলন, যেখানে বিশ্বের প্রায় ২০০ দেশের প্রতিনিধি, বিশেষজ্ঞ, বিজ্ঞানী ও পরিবেশকর্মীরা অংশ নিচ্ছেন।
আমাজন রেইনফরেস্টের প্রাণকেন্দ্র বেলেমে আয়োজিত এই সম্মেলনকে বলা হচ্ছে “COP of Truth” বা সত্যের সম্মেলন।
আয়োজক দেশ ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা জানিয়েছেন, “এবার সময় এসেছে কথা নয়, বাস্তব কাজের।”
তাই এবারের সম্মেলনে মূল গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বন সংরক্ষণ, জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা সীমা ধরে রাখার প্রচেষ্টা-তে।
এবারের সম্মেলনের প্রধান আলোচ্য বিষয়-
- আমাজনসহ বিশ্বজুড়ে বন ধ্বংস ঠেকাতে সমন্বিত পরিকল্পনা।
- জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের দেশগুলোর জন্য অর্থায়ন।
- নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা।
- “Tropical Forests Forever Fund” নামের নতুন উদ্যোগ ঘোষণার সম্ভাবনা।
যদিও আশা অনেক, বাস্তবে চ্যালেঞ্জও কম নয়। উন্নত দেশগুলো এখনো নির্ধারিত অর্থায়ন পূরণ করতে পারেনি। পাশাপাশি আয়োজক দেশ ব্রাজিল নিজেও সমালোচিত— নতুন তেল অনুসন্ধান প্রকল্প ও বেলেম শহরে হোটেল সংকট, যাতায়াত ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বাংলাদেশের জন্য কপ-৩০ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। উপকূলীয় অঞ্চল, নদীভাঙন ও ঘূর্ণিঝড়প্রবণ এলাকাগুলোর জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা আদায়ের সুযোগ তৈরি হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশের উচিত “অভিযোজন নীতি” আরও জোরদার করা এবং বন ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো।
জলবায়ু পরিবর্তনের লড়াই এখন শুধু বৈজ্ঞানিক বা নীতিনির্ধারণী ইস্যু নয়— এটি বাঁচা-মরার প্রশ্নে পরিণত হয়েছে। তাই বেলেম সম্মেলনের সিদ্ধান্ত ও প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তব রূপ পাবে কি না, সেটিই এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রত্যাশা।
এসআর
মন্তব্য করুন: