শত মামলা ও ওয়ারেন্ট থাকা সত্ত্বেও গ্রেফতার হয়নি ধামাকাশপিং চেয়ারম্যান; ক্ষুব্ধ পাওনাদারদের হাতে অবশেষে আটক।
ই-কমার্স জালিয়াতির অন্যতম আলোচিত প্রতিষ্ঠান ধামাকাশপিং-এর চেয়ারম্যান এম আলীকে অবশেষে আটক করেছে প্রতারিত গ্রাহক ও সেলাররা। তার বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা ও গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতা ও টাকার প্রভাব খাটিয়ে তিনি আইনের চোখ ফাঁকি দিয়ে চলছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
পাওনা ফেরত না পেয়ে ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা শনিবার (তারিখ দিতে হবে) রাজধানীর একটি এলাকা থেকে এম আলীকে আটক করে ভাটারা থানায় সোপর্দ করেন।
প্রতারিত এক সেলার জানান, “আমরা বহুবার মামলা করেছি, অভিযোগ দিয়েছি—কিন্তু এম আলীকে আইনের আওতায় আনা হয়নি। তিনি প্রশাসনের কিছু প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় নিরাপদে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। তাই বাধ্য হয়ে আমরা নিজেরাই তাকে আটক করেছি।”
ধামাকাশপিং-এর আরেক শীর্ষ কর্মকর্তা, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) জসীমউদ্দীন চিশতী, প্রতারণার টাকা বিভিন্ন মাধ্যমে পাচার করে যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র। ভুক্তভোগীরা দাবি করেছেন, চিশতী অন্তত কয়েকশ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন এবং এখন যুক্তরাষ্ট্রে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছেন।
একজন প্রতারিত ভোক্তা বলেন, “আমরা টাকা দিয়েছিলাম বিশ্বাস করে। কিন্তু তারা আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করে আজ দেশ ছাড়লেও কেউ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।”
ভাটারা থানার একজন কর্মকর্তা জানান, “চেয়ারম্যান এম আলীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমরা হেফাজতে নিয়েছি। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন।”
ধামাকাশপিং ২০২০-২১ সালের দিকে আকর্ষণীয় অফারের মাধ্যমে হাজার হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা সংগ্রহ করে। কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হয়ে যাওয়ার পরও অধিকাংশ গ্রাহক তাদের পণ্য পাননি। পরে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, সিআইডি, দুদকসহ বিভিন্ন সংস্থায় একাধিক অভিযোগ জমা পড়ে।
এমন পরিস্থিতিতে প্রতিষ্ঠানটি কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়, এবং এর শীর্ষ কর্মকর্তারা আত্মগোপনে চলে যান। মামলার পর মামলা চললেও দীর্ঘদিন ধরে কোনো দৃশ্যমান ব্যবস্থা না নেওয়ায় ভুক্তভোগীরা হতাশ হয়ে পড়েছিলেন।
এসআর
মন্তব্য করুন: