ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে একাধিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এসব ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা চলছে।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) জানিয়েছে, শেখ হাসিনার সরকারের সময় সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে বাংলাদেশ থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক পদে মনোনয়ন দেওয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, মনোনয়নকালে তিনি কানাডার পাসপোর্টধারী ছিলেন, যা বাংলাদেশের স্বার্থের জন্য প্রশ্নবিদ্ধ।
দুদক বলছে, অনিয়ম ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহারের মাধ্যমে সায়মা ওয়াজেদকে এই পদে প্রভাব খাটিয়ে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এতে দেশের আন্তর্জাতিক মর্যাদা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বিশেষ অভিযোগসমূহ
১. রাষ্ট্রীয় সফরে অনিয়ম
দুদকের প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, সায়মা ওয়াজেদকে যুক্তিযুক্ত কারণ ছাড়াই বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সফরে সঙ্গে নেওয়া হয়, যা রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয়।
২. কানাডার নাগরিকত্ব
মনোনয়নকালে তিনি কানাডার পাসপোর্টধারী ছিলেন বলে তথ্য মিলেছে। এ অবস্থায় তাকে আন্তর্জাতিক পদে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া অনৈতিক বলে দুদক মনে করছে।
৩. অপব্যয়ের অভিযোগ
ডব্লিউএইচওর ৭৬তম সম্মেলনে অংশ নিতে ২০২৩ সালে দিল্লিতে শতাধিক প্রতিনিধি পাঠানো হয়, যেখানে সায়মা ওয়াজেদ তার পারিবারিক প্রভাব খাটিয়ে রাষ্ট্রীয় অর্থ অপব্যবহার করেন বলে অভিযোগ।
৪. পূর্বাচল প্লট দখল
তিনি বেআইনিভাবে পূর্বাচল আবাসিক প্রকল্পের ডিপ্লোমেটিক জোনে ১০ কাঠার প্লট নিজের নামে বরাদ্দ নিয়েছেন। এ ঘটনায় দুদক একটি মামলা দায়ের করেছে।
৫. সূচনা ফাউন্ডেশনের অর্থ আত্মসাৎ
‘সূচনা ফাউন্ডেশন’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান খুলে জোরপূর্বক অর্থ আদায় ও রাষ্ট্রীয় প্রকল্প থেকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও উঠেছে।
৬. করমুক্ত সুবিধা আদায়
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওপর অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে ফাউন্ডেশনের নামে প্রাপ্য অর্থ করমুক্ত করিয়ে সরকারের অর্থের ক্ষতি করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
দুদক জানিয়েছে, এসব অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধানে পর্যাপ্ত তথ্য মিলেছে এবং তদন্ত চলছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: