বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণের প্রতিশ্রুতি গত এক দশকেও পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে উন্নত দেশগুলো।
এর মধ্যেই জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি) পক্ষ থেকে বছরে ১ ট্রিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণের নতুন দাবি তোলা হয়েছে।
আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে চলমান কপ২৯ সম্মেলনে এই দাবি উত্থাপন করেন এলডিসি নেতারা।
তবে এ দাবির বাস্তবায়নকে জটিল ও কঠিন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, গত বছরগুলোতে উন্নত দেশগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা পূরণ করেনি।
অর্থ ছাড় বা ক্ষতিপূরণের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জটিলতার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো প্রয়োজনীয় সহায়তা পাচ্ছে না।
জলবায়ু অর্থায়নের পরিবর্তে উন্নত দেশগুলো ঋণ প্রদানে আগ্রহী বলে অভিযোগ তুলেছেন এলডিসি প্রতিনিধিরা। বাংলাদেশ ডেলিগেশন টিমের সদস্য ড. মিজানুর রহমান বলেন, “২০২০ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলার প্রাপ্তির কথা থাকলেও তা অর্জিত হয়নি।
২০২২ সালে উন্নত বিশ্ব ১১৬ বিলিয়ন ডলার দিয়েছে বলে দাবি করলেও অক্সফামের হিসাব অনুযায়ী এটি প্রয়োজনের তুলনায় এক-চতুর্থাংশেরও কম। ফলে এই সম্মেলনেও ক্ষতিপূরণ আদায়ের বিষয়ে আমরা খুব আশাবাদী নই।”
সম্মেলনে ব্যবসায়ী ও ব্যাংকিং খাতের নেতারা ১০ ট্রিলিয়ন ডলার সবুজ শিল্পে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছেন।
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ৩৫০ কোটি ডলার তহবিল ঘোষণা করেছে এবং আজারবাইজানের ব্যাংকিং খাত ২০৩০ সালের মধ্যে সবুজ প্রকল্পে ১.২ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এছাড়া, সুইডেন জাতিসংঘের সবুজ জলবায়ু তহবিলে ৭৩০ মিলিয়ন ডলার অর্থায়নের ঘোষণা দিয়েছে।
তবে বিনিয়োগের এই ঘোষণায় আশার আলো দেখছেন না বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত দেশগুলোর বিশেষজ্ঞরা।
তাদের দাবি, বিনিয়োগ বা ঋণের পরিবর্তে উন্নত দেশগুলোর কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করতে হবে। লস অ্যান্ড ড্যামেজ বিশেষজ্ঞ মো. হাফিজ খান বলেন, “আমরা এডাপটেশন, মিটিগেশন, লস অ্যান্ড ড্যামেজ খাতে ঋণ নয়, বরং বার্ষিক ১.৩ ট্রিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণের লক্ষ্য নির্ধারণ করতে চাই।”
এবারের সম্মেলনে উন্নত দেশের শীর্ষ নেতাদের অনুপস্থিতি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে শঙ্কা সৃষ্টি করেছে।
তারা মনে করছেন, রাষ্ট্রপ্রধানদের অনুপস্থিতি অর্থ ছাড়ের ক্ষেত্রে বাধা হতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিনিধিদের সদিচ্ছা থাকলে এই অনুপস্থিতি বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে না।
এই সম্মেলনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো কতটা সফলভাবে তাদের দাবিগুলো তুলে ধরতে পারে এবং বাস্তবায়নের অগ্রগতি দেখতে পায়, তা সময়ই বলে দেবে।
এসআর
মন্তব্য করুন: