প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ দেশগুলোর তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান বরাবরই শীর্ষে।
ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা, খরা—প্রতিবছরই বিভিন্ন দুর্যোগ আমাদের জীবন, সম্পদ ও পরিবেশে ব্যাপক ক্ষতি ডেকে আনে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তালিকায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে ভূমিকম্পের ঝুঁকি।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন—এ অঞ্চলে যেকোনো সময় ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানতে পারে, যা হতে পারে ভয়াবহ ব্যাপ্তির।
ভূতাত্ত্বিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশের সিলেট থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত বিস্তৃত পার্বত্য অঞ্চলটি বহুদিন ধরেই সক্রিয় টেকটোনিক প্লেটের চাপের মধ্যে রয়েছে। পাশাপাশি ভারতের মণিপুর, মিজোরাম ও মিয়ানমারের পার্বত্য এলাকাও একই ঝুঁকিতে রয়েছে।
তাদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, কিশোরগঞ্জের হাওর এলাকা থেকে মেঘনা নদী হয়ে বঙ্গোপসাগর ও আন্দামান পর্যন্ত বিস্তৃত একটি কাল্পনিক রেখা ধরলে বোঝা যায়—এই অঞ্চলটি ইন্ডিয়ান প্লেট ও বার্মা প্লেটের সংযোগস্থল। সংযোগস্থলের সুনামগঞ্জ থেকে মণিপুর–মিজোরাম পর্যন্ত বিশাল অংশ ‘লকড’ হয়ে আছে, অর্থাৎ এখানে বছরের পর বছর ধরে বিপুল পরিমাণ শক্তি জমা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইতোমধ্যে এই অঞ্চলে ৮.২ থেকে ৯ মাত্রা পর্যন্ত শক্তির সমমান জমা হয়ে গেছে। এ শক্তি যেকোনো সময় নিঃসৃত হয়ে বড় ধরনের ভূমিকম্প ঘটাতে পারে। তাই এখনই সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।
চলতি বছরে (১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) দেশে ১০টি হালকা ও মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। যদিও এসব কম্পনে বড় কোনো ক্ষতি হয়নি, তবে বিশেষজ্ঞদের মতে এটি বড় ভূমিকম্পের পূর্বাভাস হতে পারে।
বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলেও বড় ভূমিকম্পের আগমুহূর্তে এমন হালকা কম্পন একাধিকবার দেখা গেছে। চলতি বছরের শুরুতে তুরস্ক–সিরিয়ায় ৭.৮ মাত্রার বিধ্বংসী ভূমিকম্পে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল এবং লাখো ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়। পরবর্তী কয়েকদিন সেখানে একাধিক আফটারশক দেখা দেয়।
বাংলাদেশে এ বছরের প্রথম ভূকম্পন অনুভূত হয় ১৬ ফেব্রুয়ারি, এরপর ধাপে ধাপে আরও কয়েকটি হালকা ধরনের কম্পন হয়, যা ভূতাত্ত্বিকদের আরও বেশি উদ্বিগ্ন করছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন—
ভূমিকম্পের ঝুঁকি পুরোপুরি ঠেকানো না গেলেও সঠিক প্রস্তুতি বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি অনেকটাই কমিয়ে আনতে পারে বলে মনে করছেন তারা।
এসআর
মন্তব্য করুন: