[email protected] রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
২৯ ভাদ্র ১৪৩২

শিল্পী ফরিদা পারভীন আর নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১১:২৪ পিএম

সংগৃহীত ছবি

দেশবরেণ্য লালনসংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টা ১৫ মিনিটে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার জামাতা সাজ্জাদুর রহমান খান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মৃত্যুকালে ফরিদা পারভীনের বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। তিনি স্বামী, চার সন্তানসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

দীর্ঘদিন ধরেই নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন এই লালনসংগীতের দিকপাল। কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ায় সপ্তাহে দুদিন তাকে নিয়মিত ডায়ালাইসিস করাতে হতো। গত ২ সেপ্টেম্বর নিয়মিত ডায়ালাইসিসের জন্য মহাখালীর একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে ভর্তি করা হয় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ)। সেখানে অবস্থার আরও অবনতি হলে তাকে ভেন্টিলেশনে নেওয়া হয়।

কিডনির জটিলতার পাশাপাশি তিনি ফুসফুসের সমস্যা, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও থাইরয়েডজনিত রোগে ভুগছিলেন। হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তী জানিয়েছিলেন, তার রক্তচাপ আশঙ্কাজনকভাবে কমে গিয়েছিল এবং সংক্রমণও মারাত্মক আকার ধারণ করেছিল।

১৯৫৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর নাটোরের সিংড়া থানায় জন্ম নেন ফরিদা পারভীন। গানের ভুবনে তার যাত্রা শুরু হয় পারিবারিক প্রভাবেই—বাবা ও দাদির সঙ্গীতপ্রীতি তাকে উদ্বুদ্ধ করে। বাবার চাকরির সুবাদে বিভিন্ন জেলায় বেড়ে উঠলেও গান ছিল তার জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।

মাত্র ১৪ বছর বয়সে, ১৯৬৮ সালে রাজশাহী বেতারে তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে তার পেশাদার সংগীতজীবন শুরু হয়। ১৯৭৩ সালে দেশাত্মবোধক গান গেয়ে ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেন। পরবর্তী সময়ে সাধক মোকসেদ আলী শাহের কাছে লালনসংগীতে তালিম নিয়ে ধীরে ধীরে তিনি হয়ে ওঠেন ‘লালনসংগীতের জীবন্ত কিংবদন্তি’।

সংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৮৭ সালে ফরিদা পারভীন একুশে পদকে ভূষিত হন। টানা পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি লালনগীতি দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে দিয়ে বাঙালির সাংস্কৃতিক ভুবন সমৃদ্ধ করেছেন।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর