পাকিস্তানি মডেল ও অভিনেত্রী হুমাইরা আসগর আলির ময়নাতদন্তে উঠে এসেছে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য।
শুক্রবার (১১ জুলাই) জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, করাচির ডিফেন্স ফেজ-৬ এলাকার একটি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া তার লাশ ছিল চরমভাবে পচনধরা অবস্থায়। ময়নাতদন্তে জানা গেছে, প্রায় ৮ থেকে ১০ মাস আগেই ৩২ বছর বয়সী এই অভিনেত্রীর মৃত্যু হয়েছিল।
গত ৮ জুলাই দুপুর সোয়া ৩টার দিকে হুমাইরার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আদালতের নির্দেশে ফ্ল্যাট খালি করতে গিয়ে পুলিশের সদস্যরা ফ্ল্যাটের দরজায় সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে লাশটি মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন।
পুলিশ সার্জন ডা. সুমাইয়া সাঈদ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত রিপোর্টে বলা হয়েছে, লাশটি এমন চরম পচনধরেছিল যে সনাক্তকরণ কঠিন হয়ে পড়েছিল। রিপোর্টের উল্লেখযোগ্য পর্যবেক্ষণগুলো হলো:
পচনের মাত্রা এতটাই তীব্র ছিল যে মৃত্যুর সুনির্দিষ্ট কারণ নির্ধারণ সম্ভব হয়নি। তবে ডিএনএ বিশ্লেষণ ও টক্সিকোলজিক্যাল পরীক্ষার মাধ্যমে আরও তথ্য উদঘাটনের চেষ্টা চলছে। চুল, রক্ত ও পোশাকের নমুনা রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
হুমাইরা দীর্ঘ সাত বছর ধরে ওই ফ্ল্যাটে একাই বসবাস করতেন। জানা গেছে, ২০২৪ সালের অক্টোবরের পর থেকে তিনি আর কারও সঙ্গে যোগাযোগ রাখেননি। প্রতিবেশীরা জানান, তিনি খুবই একাকী জীবনযাপন করতেন এবং আশপাশের বাসিন্দাদের সঙ্গে মেলামেশা করতেন না। বাড়ির মালিকের সঙ্গে ভাড়াসংক্রান্ত কিছু জটিলতাও ছিল বলে জানিয়েছেন একজন প্রতিবেশী।
লাশ উদ্ধারের পর তা করাচির একটি বেসরকারি দাতব্য সংস্থার হিমঘরে সংরক্ষণ করা হয়। প্রথমে হুমাইরার বাবা লাশ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানালেও, পরে ভাইসহ পরিবারের সদস্যরা এসে লাশ বুঝে নিয়ে লাহোরে পারিবারিকভাবে দাফন করেন।
রিয়েলিটি শো ‘তামাশা ঘর’ এবং চলচ্চিত্র ‘জালেবি’-এর মাধ্যমে পরিচিত হুমাইরার মৃত্যুর খবরে পাকিস্তানের বিনোদন অঙ্গনে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। অনেক সহকর্মী সোশ্যাল মিডিয়ায় শোক প্রকাশ করে একা থাকা মানুষদের খোঁজখবর রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
উল্লেখযোগ্যভাবে, এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটলো জনপ্রিয় টেলিভিশন অভিনেত্রী আয়েশা খানের মৃত্যুর এক মাসের মধ্যেই। ৭৭ বছর বয়সী ওই অভিনেত্রীর লাশও করাচির একটি ফ্ল্যাটে নিঃসঙ্গ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল।
এসআর
মন্তব্য করুন: