রংপুরের ঐতিহ্যবাহী কারমাইকেল কলেজে প্রায় তিন দশকেরও বেশি
সময় পর ছাত্র সংসদ—কাকসু নির্বাচনের জন্য আনুষ্ঠানিক রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. মোস্তাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই প্রাথমিক পরিকল্পনা প্রকাশ করা হয়।
রোডম্যাপ অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ সময়সূচি
৭ জানুয়ারি ২০২৬ – সব শিক্ষার্থীর আইডি কার্ড যাচাই ও হালনাগাদ সম্পন্ন করা।
১৫ জানুয়ারি ২০২৬ – ছবিযুক্ত খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পাওয়া মাত্রই নির্বাচন কমিশন গঠন।
কমিশন গঠনের দুই সপ্তাহ পর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ।
চূড়ান্ত তালিকার এক সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা।
তফসিল ঘোষণার ২০ দিনের ব্যবধানে ভোটগ্রহণ ও ফল প্রকাশ।
রোডম্যাপে চূড়ান্ত ভোটগ্রহণের নির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখ করা হয়নি; মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পাওয়ার ওপর পরবর্তী ধাপ নির্ভর করছে।
প্রশাসনের ব্যাখ্যা
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবি বিবেচনায় বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাউশি এবং স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি নির্বাচন আয়োজনের অনুমতি দ্রুত পাওয়ার জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদনও করেছে।
যদি ঘোষিত তারিখের আগেই মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি আসে, তবে রোডম্যাপ আরও এগিয়ে আনা হতে পারে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও উত্তেজনা
দিনভর ক্যাম্পাসে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করে। কাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রকাশের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করেন। পরে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরাও তাদের সঙ্গে সংহতি জানান।
এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের কার্যালয়ে প্রবেশ করে তাকে অবরুদ্ধ করেন এবং অবিলম্বে রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানান। অধ্যক্ষ উচ্চপর্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করে শিগগিরই সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয় এবং পরে রোডম্যাপ প্রকাশ করা হয়।
৩৫ বছরের বিরতি—কেন গুরুত্বপূর্ণ এই নির্বাচন?
কারমাইকেল কলেজে সর্বশেষ ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয় ১৯৯০ সালে। এরপর থেকে কাকসু কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়ে।
এতে—
শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক চর্চা
নেতৃত্ব তৈরির সুযোগ
অধিকার আদায়ের প্ল্যাটফর্ম
গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
১৯১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এই কলেজে বর্তমানে প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। দীর্ঘদিন নির্বাচন না হওয়ায় কাকসুর তহবিলে প্রায় ১ কোটি টাকার মতো অর্থ অব্যবহৃত পড়ে আছে বলে জানা গেছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: