ঢাকার সরকারি সাত কলেজে শুরু হয়েছে শিক্ষকদের টানা তিন দিনের
পূর্ণদিবস কর্মবিরতি। প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধীনে ভর্তি কার্যক্রম শুরু ও ক্লাস নেওয়ার নির্দেশনাকে “আইনের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ” বলে দাবি করে শিক্ষকরা এই কর্মসূচি পালন করছেন। ফলে সাত কলেজের সব একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম কার্যত বন্ধ হয়ে পড়েছে।
শিক্ষকদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ সরকারিভাবে চূড়ান্ত না হওয়া সত্ত্বেও ভর্তি নিশ্চায়ন এবং ক্লাস শুরুর নির্দেশনা জারি করা হয়েছে, যা বিভিন্ন ধরনের আইনি জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। তাদের ব্যাখ্যা— বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের আওতায় কর্মরত সরকারি কলেজের শিক্ষকরা প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একাডেমিক বা ভর্তি কার্যক্রমে যুক্ত হওয়ার আইনগত সুযোগ এখনো পান না। এমন অবস্থায় সংশ্লিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া দায়িত্বহীনতার পরিচায়ক।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সাত কলেজ ঘুরে দেখা যায়, শিক্ষকদের আহ্বানে ক্লাস কার্যক্রম সম্পূর্ণ অচল হয়ে পড়েছে। ঢাকা কলেজে শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক উপস্থিতি না থাকায় পুরো ক্যাম্পাস ছিল নীরব। কয়েকজন ছাত্র জানান, সকালেই বিভাগের গ্রুপে কর্মবিরতির খবর পেয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য এসেছেন—কোনো ক্লাস হয় কি না তা দেখতে। পুরো ভবনজুড়ে দেখা গেছে তালাবদ্ধ বা ফাঁকা কক্ষ; কোনো শিক্ষক ক্লাস নেননি।
ইডেন মহিলা কলেজেও একই পরিস্থিতি। প্রধান ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ছাত্রীরা জানান, তাদের বিভাগের তিনটি ক্লাস থাকার কথা ছিল, কিন্তু সকালে শিক্ষকেরা জানিয়ে দিয়েছেন— কর্মবিরতির কারণে ক্লাস বাতিল। ক্যাম্পাসে শুধু নিরাপত্তাকর্মীরা দায়িত্ব পালন করলেও শিক্ষক-কর্মচারীদের উপস্থিতি ছিল খুবই কম।
এর আগে সোমবার (১৭ নভেম্বর) ঢাকা কলেজ অডিটোরিয়ামে জরুরি সভায় ১৮–২০ নভেম্বর তিন দিনের পূর্ণদিবস কর্মবিরতির ঘোষণা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে সাত কলেজের সাধারণ সভা ও বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে ভর্তি ও শ্রেণিকার্যক্রম সংক্রান্ত নির্দেশনা জারির কারণে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অন্তর্বর্তী প্রশাসকের পদত্যাগও তিন কার্যদিবসের মধ্যে দাবি করেন শিক্ষকরা।
তারা জানান, কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে সাত কলেজকে কেন্দ্র করে অপ্রয়োজনীয় জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। তাই সাত কলেজের স্বাধীন কাঠামো বজায় রেখে দ্রুত প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে স্থায়ী সমাধান নিশ্চিত করতে হবে।
তবে শিক্ষকরা স্পষ্ট করেছেন— ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চলমান পাবলিক পরীক্ষা এই কর্মসূচির বাইরে থাকবে।
বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা বলেছেন, প্রয়োজন হলে তারা সারাদেশের সরকারি কলেজগুলোকে সঙ্গে নিয়ে আরও বৃহত্তর কর্মসূচির দিকে এগিয়ে যাবেন।
এসআর
মন্তব্য করুন: