[email protected] রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫
১১ কার্তিক ১৪৩২

সাংবাদিকদের টাকা-মোবাইল দেন শিক্ষকরা - কুবি উপাচার্য

কুবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৪ অক্টোবর ২০২৫ ৩:৫৭ পিএম

সংগৃহীত ছবি

‘কিছু শিক্ষক জঘন্যভাবে সাংবাদিকদের ব্যবহার করছেন, তাদের টাকা-পয়সা ও মোবাইলও কিনে দেন’- এমন মন্তব্য করেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী।

গত মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) এনটিভির প্রতিবেদক ফোনে ভিন্ন একটি বিষয়ে তাঁর বক্তব্য চাইলে তিনি এ মন্তব্য করেন।

উপাচার্য বলেন, ‘আপনাকে কে পাঠিয়েছে এটা জানা আমার দরকার। আমি দেখেছি কিছু শিক্ষক সাংবাদিকদের ব্যবহার করছে। তাদের টাকা দেয়, মোবাইলও কিনে দেয়— এমন কথাও শুনেছি।’

প্রতিবেদক যখন নিশ্চিত করেন যে তাঁকে কেউ পাঠাননি এবং সংবাদ প্রয়োজনে বক্তব্য নিচ্ছেন, তখন উপাচার্য বলেন, ‘না, আপনাকে ডেফিনেটলি কেউ পাঠিয়েছে।

আপনি এখানকার ছাত্র, চাইলে আপনার বিরুদ্ধে অ্যাকশন নিতে পারব।’

পরবর্তীতে অভিযোগের সত্যতা ও প্রমাণ বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, ‘আমি একা নই, এটা প্রচলিত কথা। সাংবাদিকরা শিক্ষকের ঘরে যায়, উপহার নেয়— এমন কথা অহরহ শুনি। একজন-দুজন থেকে নয়, অনেকের কাছ থেকেই শুনেছি।’

শোনা কথার ভিত্তিতে এমন মন্তব্যের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘অনেক কথাই তো ফরমালভাবে বলা যায় না।’

ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের প্রসঙ্গে উপাচার্য আরও বলেন, ‘আমার ৩৫ বছরের শিক্ষকতা জীবনে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়েই প্রথম ছাত্র সাংবাদিক দেখলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কখনো ছাত্র সাংবাদিক দেখিনি।’

তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের প্রায় সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েই শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার পাশাপাশি সাংবাদিকতা করেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘করতে পারে, তবে আমার সামনে পড়েনি। আমার বিভাগেও এমন কাউকে দেখিনি। টিএসসিতে সাংবাদিক সংগঠনগুলোর ঘর আছে, তারা ওখানেই থাকে।’

উক্ত বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (ডিইউজিএস) সভাপতি মহিউদ্দিন মোজাহিদ বলেন,
‘একজন উপাচার্যের এমন মন্তব্য অত্যন্ত দুঃখজনক ও মর্মাহত করেছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানসহ নানা সময়ে ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের অবদান সর্বজনস্বীকৃত।

তিনি যেভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকদের ছোট করেছেন, তা অশুভ ও অগ্রহণযোগ্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘উপাচার্য হয়তো বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস্তব চিত্র সম্পর্কে পর্যাপ্ত ধারণা রাখেন না। সেজন্যই তিনি এমন মন্তব্য করেছেন।’

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের এনটিভি প্রতিনিধি ফরহাদ হোসাইন হিমু বলেন,
‘পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমি উপাচার্যকে ফোন দিই। তাঁর কাছ থেকে এমন মন্তব্য আশা করিনি। শোনা কথার ভিত্তিতে সাংবাদিকদের নিয়ে এমন মন্তব্য অত্যন্ত দুঃখজনক।’

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ইমতিয়াজ হাসান রিফাত বলেন,
‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক হিসেবে উপাচার্যের শোনা কথার ভিত্তিতে এমন মন্তব্য করা উচিত হয়নি। সাংবাদিকদের অবদান তিনি অস্বীকার করেছেন এবং শিক্ষকদেরও অপমান করেছেন। আমরা এ মন্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। 

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর