রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করেছে।
এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা–কর্মচারীরা।
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করেন। শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলকের সামনে লিচুতলায় তাদের অবস্থান কর্মসূচি চলতে থাকে। যদিও রাকসুর সব কার্যক্রম ও জরুরি সেবা এ কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার সমিতির সভাপতি মুক্তার হোসেন বলেন, “আমাদের উপ-উপাচার্য ও কর্মকর্তাদের হেনস্তার ঘটনায় জড়িতদের দৃশ্যমান শাস্তি না হওয়া এবং আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ চলবে। চিকিৎসা, পানি ও বিদ্যুতের মতো জরুরি সেবা এই কর্মসূচির বাইরে থাকবে, তবে ক্লাস–পরীক্ষা এর আওতায় পড়বে।”
জরুরি সিন্ডিকেট সভায় তিনটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়—
রাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য মোস্তাফা কামাল আকন্দ জানান, “আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। স্বাভাবিক অবস্থা ফিরলে ২৫ সেপ্টেম্বরই রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।”
শনিবার দুপুরে পোষ্য কোটা পুনর্বহালের দাবিতে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় সহ-উপাচার্য মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীনের গাড়ি আটকে দিয়ে তার বাসভবনের ফটকে তালা লাগান আন্দোলনকারীরা। পরে জুবেরী ভবনে প্রবেশের সময় শিক্ষার্থী–শিক্ষকদের সঙ্গে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে এবং উপ-উপাচার্য মাটিতে পড়ে যান। এছাড়া রেজিস্ট্রার ও প্রক্টরসহ কয়েকজন শিক্ষক–কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করা হয়।
দীর্ঘ সাত ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর রাত পৌনে ১০টার দিকে শিক্ষকরা মুক্তি পান। রাত সোয়া ১১টার পর কয়েক হাজার শিক্ষার্থী উপাচার্যের বাসভবনের সামনে সমবেত হয়ে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে শনিবার রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে পোস্ট দিয়ে জানানো হয়, পোষ্য কোটা স্থগিত রাখা হয়েছে এবং রোববার জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডাকা হয়েছে। উপাচার্য সালেহ হাসান নকীবও রাত দেড়টার দিকে বাসভবনের সামনে এসে মাইক হাতে একই ঘোষণা দেন।
তবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এতে সন্তুষ্ট না হয়ে নির্বাহী আদেশে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যান। পরে রাত গভীর হলে তারা ধীরে ধীরে বাসভবনের সামনে থেকে সরে যান।
এসআর
মন্তব্য করুন: