[email protected] মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫
৩১ আষাঢ় ১৪৩২

তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’ স্লোগানে ফের উত্তাল ঢাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৪ জুলাই ২০২৫ ১১:৫৮ পিএম

সংগৃহীত ছবি

তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’—এই পরিচিত স্লোগানে ফের উত্তাল হয়ে উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাস।

গত বছরের এই দিনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে দেওয়া এক মন্তব্যকে ঘিরে দেশজুড়ে সৃষ্টি হয় ব্যাপক সমালোচনা ও আন্দোলনের ঢেউ। সেই ঘটনাকে স্মরণ করেই শিক্ষার্থীরা আবারও রাজপথে নেমে আসেন।

রবিবার (১৪ জুলাই) রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে টিএসসি অভিমুখে আসেন এবং সেখানে বিক্ষোভ করেন। শতশত শিক্ষার্থী তখন ফের আওয়াজ তোলেন—
“তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার”, “চাইতে এলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার”, “কে বলেছে কে বলেছে—স্বৈরাচার স্বৈরাচার।”
এই স্লোগানে প্রকম্পিত হয় পুরো ক্যাম্পাস।

 

২০২৪ সালের ১৪ জুলাই বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন,
“যত রাজাকারের বাচ্চারা, নাতি-পুতিরা হলো মেধাবী?”
এর আগে এক সাংবাদিক মন্তব্য করেন,
“আমার সামনে যদি দুজন সমান মেধাবী প্রার্থী থাকে, একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, আরেকজন রাজাকারের সন্তান—তাহলে আমি মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে চাকরি দেব।”
এই মন্তব্যের সূত্র ধরেই প্রধানমন্ত্রী তার প্রতিক্রিয়া দেন। পুরো বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায় এবং সমালোচনার ঝড় ওঠে।

প্রধানমন্ত্রীর ওই মন্তব্যের পরপরই রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদে ফেটে পড়েন। হলগুলোতে অবস্থান নেওয়া ছাত্রলীগ কর্মীদের সঙ্গে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তবে আন্দোলনকারীরা সংগঠিত হয়ে টিএসসি এলাকায় সমবেত হন এবং সেখানে শুরু হয় প্রতিবাদ সভা ও স্লোগান।

ছাত্রীরা নিজ নিজ হল থেকে গেটের তালা ভেঙে আন্দোলনে যোগ দেন। কেবল ঢাবি নয়, আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্তেও আন্দোলনের ধারা ছড়িয়ে পড়ে। কোটাবিরোধী আন্দোলনের একটি নতুন মোড় নেয় তখন থেকেই।

 

যে আন্দোলন আদালত বা সরকারের নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে নিষ্পত্তির পথে এগোচ্ছিল, প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের পর তা আবারও বেগ পায়। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে দমন-পীড়নের অভিযোগ উঠে এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতিরোধ গড়ে ওঠে।
অনেকে এটিকে কোটাবিরোধী আন্দোলনের টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে চিহ্নিত করেন।

 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাংবাদিকের বক্তব্য ও প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য ঘিরে শুরু হয় বিতর্ক ও সমালোচনার ঝড়। নানা ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন, পোস্ট ও প্রতিবাদী লেখা ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি সরকারি দল ও প্রশাসনের মধ্যেও এই বক্তব্য নিয়ে অস্বস্তির ইঙ্গিত পাওয়া যায়।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর