শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে ১৪ মে-কে ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কালো দিবস’ ঘোষণা করেছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
একইসঙ্গে তাঁরা নতুন কর্মসূচি হিসেবে গণ-জমায়েত ও গণ-অনশন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) রাতে ‘জবি ঐক্য’-এর পক্ষ থেকে এসব কর্মসূচি ঘোষণা করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সামসুল আরেফিন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন বলেন, “আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার একমত হয়েছি—আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে এবং আমরা স্থান ত্যাগ করব না।”
তিনি জানান, দাবির বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট ঘোষণা না পাওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে। বৃহস্পতিবার রাতেও অবস্থান কর্মসূচি চলছে। শুক্রবার সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের সমাবেশ এবং জুমার নামাজের পর গণ-অনশন ও অবস্থান কর্মসূচি শুরু হবে।
তথ্য উপদেষ্টার ওপর বোতল ছোড়ার ঘটনায় রইছ উদ্দীন বলেন, “যে শিক্ষার্থী ওই ঘটনায় জড়িত, তাকে অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা হবে। তবে তার আগে যারা আমাদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে, তাদেরও বিচার নিশ্চিত করতে হবে।”
এর আগে বুধবার রাতভর শিক্ষার্থীরা কাকরাইল মোড়ে অবস্থান করেন এবং বৃহস্পতিবার সকাল থেকে প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থী সেখানে জমায়েত হন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’র উদ্দেশ্যে পদযাত্রা শুরু করলে গুলিস্তান ও মৎস্য ভবনের কাছে পুলিশি বাধার সম্মুখীন হন।
কাকরাইল মসজিদ ক্রসিং মোড়ে পৌঁছাতেই পুলিশ টিয়ার গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও গরম পানি ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। এতে অন্তত ৩০ জন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী আহত হন।
আন্দোলনের পেছনে মূল কারণ হিসেবে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সঙ্গে আলোচনায় দাবি পূরণ না হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেন। তারা অভিযোগ করেন, বাজেট ও আবাসন সংকট নিয়ে আলোচনার পরও কোন ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
জবি শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবি হলো—
১. ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০% শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
২. ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করে অনুমোদন দিতে হবে।
৩. দ্বিতীয় ক্যাম্পাস প্রকল্প একনেক সভায় অনুমোদন দিয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করতে হবে।
৪. শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী পুলিশ সদস্যদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে।
এসআর
মন্তব্য করুন: