[email protected] রবিবার, ১৮ মে ২০২৫
৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শাটডাউন ঘোষণা, দাবির পক্ষে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একজোট অবস্থান

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৫ মে ২০২৫ ৩:৩৭ পিএম

ফাইল ছবি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান আন্দোলন নতুন মোড় নিয়েছে।

 শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও পরীক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইস উদ্দিন।

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) কাকরাইলে অবস্থানরত আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকার আদায়ের জন্য এখানে এসেছি। আমাদের ওপর যে পুলিশি হামলা হয়েছে, তা অমানবিক ও অন্যায়। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কেউ ঘরে ফিরবে না, বিশ্ববিদ্যালয় শাটডাউন চলবে।”

তিনি আরও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “আমার চোখের সামনে আমার কোনো শিক্ষার্থীকে কেউ আঘাত করলে তা মেনে নেওয়া হবে না। আমাদের সরাতে কেউ যদি কোনো পদক্ষেপ নেয়, তার ফল ভালো হবে না।”

আন্দোলনের মূল স্লোগানগুলোর মধ্যে ছিল— “আবাসন চাই, বঞ্চনা নয়”, “বাজেট কাটছাঁট চলবে না” এবং “হামলার বিচার চাই”।

শিক্ষার্থীরা টানা ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে কাকরাইল মসজিদের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। ক্লান্তি ও ভোগান্তি সত্ত্বেও কেউ আন্দোলন ত্যাগ করেননি। অনেকেই রাস্তায় রাত কাটিয়ে পরদিনও অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছেন।

শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবি:

১. ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি চালু করা
২. প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করে অনুমোদন
৩. দ্বিতীয় ক্যাম্পাস প্রকল্প একনেক সভায় পাশ ও দ্রুত বাস্তবায়ন
৪. ১৪ মে পুলিশের হামলার নিরপেক্ষ তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা

ঘটনার পটভূমি:

বুধবার (১৪ মে) সকাল ১১টায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের উদ্দেশে লং মার্চ শুরু করেন। গুলিস্তান ও মৎস্য ভবন অতিক্রম করে কাকরাইল মসজিদের সামনে পৌঁছালে, বেলা ১২টা ৪০ মিনিটে পুলিশ টিয়ার গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও গরম পানি ব্যবহার করে মিছিলে হামলা চালায়। পরে লাঠিচার্জে বহু শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও সাংবাদিক আহত হন।

উপদেষ্টার সামনে উত্তেজনা:

রাতে আন্দোলনস্থলে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য দেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তার বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন শিক্ষার্থীরা। তারা ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীদের একজন তার দিকে পানির বোতল নিক্ষেপ করেন, যা সরাসরি উপদেষ্টার মাথায় লাগে। এরপর মাহফুজ আলম বক্তব্য বন্ধ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে কাকরাইল এলাকায় অবস্থান জোরদার করেন।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর