দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কার্যকর ও টেকসই নীতিমালার অভাবে দ্রুতই মুখ থুবড়ে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মিজানুর রহমান।
মঙ্গলবার (১৩ মে) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, “পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বর্তমান অবস্থা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যে পথ ধরে এগোচ্ছে, তাতে অর্থবহ সংস্কার না হলে এগুলো অচিরেই কার্যকারিতা হারাবে।”
তিনি বলেন, “পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দুর্দশা বহুমাত্রিক— নিয়মিত ক্লাস ও পরীক্ষা না হওয়া, দীর্ঘ সেশনজট, শিক্ষার চেয়ে অন্যান্য বিষয়কে বেশি গুরুত্ব দেওয়া এবং সার্বিকভাবে শিক্ষার মানের নিম্নগতি এই সংকটের মূল কারণ।”
অধ্যাপক মিজান বলেন, “এই অবস্থা একদিনে সৃষ্টি হয়নি। স্বাধীনতার পর থেকেই ধীরে ধীরে এই অবক্ষয় শুরু হয়েছে। অথচ রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে পরিচালিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উন্নয়নে এখনো কার্যকর নীতিমালা গৃহীত হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তুলনামূলকভাবে ভালো করছে। এমনকি অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিজেদের সন্তানদের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াচ্ছেন— যা বর্তমান বাস্তবতার একটি দৃষ্টান্ত।”
বিশ্ববিদ্যালয় র্যাংকিংয়ের পেছনে অন্ধভাবে ছুটে চলাকেও তিনি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হিসেবে উল্লেখ করেন। তার মতে, “সংস্কারহীন এই দৌড় সমস্যার সমাধান নয়, বরং একে আরও ঘনীভূত করে তুলছে।”
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, “যারা দায়িত্বে আছেন— মন্ত্রী থেকে ছাত্রনেতা পর্যন্ত— সবাই এই সংকট সম্পর্কে অবগত। কিন্তু রাজনৈতিক গোষ্ঠীগত স্বার্থের কারণে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না।”
ইন্টারিম সরকারের প্রতি হতাশা প্রকাশ করে তিনি লেখেন, “এই সরকারের সামনে ছিল দেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় টেকসই সংস্কার আনার একটি দুর্লভ সুযোগ। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে তারা সেই দায়িত্বপালনে কোনো উদ্যোগই নেয়নি। এটি জাতির জন্য এক বিশাল ক্ষতি।”
এসআর
মন্তব্য করুন: