খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদে ও ৬ দফা দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে।
রোববার বিকেলে রাজধানীর ‘যমুনা’ ভবনে গিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে এই স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
পরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে একটি সংবাদ ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্যাম্পাসে না ফেরার ঘোষণা দেন।
শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, খুলনা থেকে দুটি বাসে প্রায় ৫০ জন শিক্ষার্থী ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন।
রমনা থানা থেকে তাদের শহীদ মিনারে অবস্থান নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়, যেখানে পৌঁছানোর পর পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে।
তারা কুয়েট প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের অপসারণসহ ছয় দফা দাবি সংবলিত স্মারকলিপি হস্তান্তর করেন এবং সংঘর্ষ–পরবর্তী সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে তাকে অবহিত করেন।
প্রতিনিধি দলের সদস্যরা জানান, প্রধান উপদেষ্টা তাদের আশ্বস্ত করেছেন যে তিনি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবেন। শিক্ষার্থীদের বিশ্বাস, সরকার দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেবে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, কুয়েট ক্যাম্পাস এখনো তাদের জন্য নিরাপদ নয়। হামলাকারীদের শনাক্ত করা হলেও তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
প্রশাসন চারজনকে গ্রেপ্তার করলেও মূল অভিযুক্তরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ফলে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ফেরার বিষয়ে অনিশ্চয়তা প্রকাশ করেন।
ঢাকায় রওনা দেওয়ার আগে শিক্ষার্থীরা খুলনায় আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে বলেন, তারা ক্যাম্পাসে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাই তারা প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়ে আপাতত নিরাপদ স্থানে অবস্থান নেবেন এবং অনলাইন কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন।
শিক্ষার্থীদের দাবি, কুয়েট প্রশাসনের কিছু সদস্য ভুল তথ্য দিয়ে দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে বলে প্রচার করছেন, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। হামলার ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করা হয়েছে।
তারা জানান, শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত করা তালিকায় অভিযুক্তদের পরিচয়, ছবি ও তথ্য স্পষ্টভাবে দেওয়া হয়েছে, কিন্তু প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে ছাত্রদলের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন।
এ ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন।
তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা, ১৮ ফেব্রুয়ারির ঘটনায় জড়িতদের স্থায়ী বহিষ্কার, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য সামরিক বাহিনী মোতায়েন, আহতদের চিকিৎসার খরচ বহন, এবং ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের পদত্যাগ।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, এসব দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন এবং ক্যাম্পাসে ফিরবেন না।
এসআর
মন্তব্য করুন: