জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থী রাচির মৃত্যু নিয়ে আটক রিকশাচালক আরজু মিয়া নির্দোষ দাবি করেছেন তার পরিবার।
তারা অভিযোগ করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আরজু মিয়াকে ফাঁসিয়েছে এবং তিনি ওই দুর্ঘটনায় জড়িত ছিলেন না।
শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) এক সাক্ষাৎকারে আরজু মিয়ার পরিবার অভিযোগ করেন যে, তার বাবা দুর্ঘটনার দিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। আরজু মিয়ার মেয়ে, আরজিনা আক্তার জানান, তার বাবা একজন টেইলারিং কাটিং মাস্টার এবং পুরানো অটোরিকশা কিনে সেটি রং করে বিক্রি করতেন। তিনি বলেন, ঘটনার দিন তার বাবা গাজীপুরের একটি দোকানে ছিলেন এবং সিসিটিভি ফুটেজেও তার উপস্থিতি দেখা গেছে।
আরজিনা বলেন, ২৩ নভেম্বর এক ব্যক্তির ফোনে তার বাবা প্রক্টর অফিসে ডেকে যান এবং বিকাল ৪টার দিকে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু পরদিন রাতে ১০-১৫ জন লোক তাদের ঘরে ঢুকে রফিকুল নামে একজনকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তারা রফিকুলের ফোনও চেক করেন, কিন্তু তার ফোনে ওই দিন কোনো কল আসেনি। পরবর্তীতে তারা আরজু মিয়াকে গাজীপুরের দোকানে নিয়ে যাওয়ার পর সত্যতা যাচাইয়ের জন্য সিসিটিভি ফুটেজও দেখেন, যা তার পক্ষে সাক্ষ্য দেয়।
আরজিনা আরো বলেন, ঘটনার পর রিকশাটি বিক্রি করার সময় ওই ব্যক্তির কাছ থেকে শুনতে পায় যে, তিনি রিকশাটি দুর্ঘটনার দুই দিন পর কিনেছেন। এই বিষয়ে রিকশার মালিকের কাছেও তথ্য নেওয়া হয়।
তিনি বলেন, ২৪ নভেম্বর রাতে আরজু মিয়াকে রিকশা দেখানোর জন্য ডেকে নিয়ে, পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় বলা হয়, দুজন যাত্রী তার রিকশায় ছিলেন, অথচ ঝালমুড়ি বিক্রেতা রফিকুল বলেন, ‘‘আমি ওই দিন আরজু মিয়াকে দেখিনি, তবে আমাকে জোর করে সাক্ষী হতে বলা হয়েছে।’’
আরজু মিয়ার পরিবারের দাবি, দুর্ঘটনার সময় সন্ধ্যা ৬:৫০টা ছিল এবং তখন ক্যাম্পাসের আলোকসজ্জা তেমন ভালো ছিল না। তারা প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘যদি রিকশা দুর্ঘটনা ঘটানোর পর দাঁড়াতো, তাহলে কেন ওই যাত্রীরা চালককে আটকালো না? আর কেন তারা দুর্ঘটনার পর চালকের চেহারা স্পষ্টভাবে দেখতে পারেনি?’’
আরজু মিয়ার স্ত্রী জানান, ‘‘আমার স্বামীকে অন্যায়ভাবে ফাঁসানো হয়েছে। আমরা প্রভাবশালী নই, তাই আমাদের প্রতি এভাবে আচরণ করা হচ্ছে।’’ তিনি আরো বলেন, ‘‘আমরা অনেক দপ্তর ঘুরে এসেছি, কিন্তু কেউ আমাদের কথা শুনছে না। আমার স্বামীর মুক্তি চাই।’’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, ‘‘এই ঘটনার ব্যাপারে কথা বলতে হলে, রোববার দুপুরে প্রক্টর অফিসে আসতে হবে।’
এসআর
মন্তব্য করুন: