জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণের কাজ সেনাবাহিনীর হাতে হস্তান্তর করার বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোনো আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
মঙ্গলবার, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে অনুষ্ঠিত মিটিং শেষে তিনি সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন। তিনি বলেন, "কেরানীগঞ্জে নতুন একটি ক্যাম্পাস নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল যা পরিকল্পনা কমিশনের পর্যালোচনাধীন ছিল। আমি নিজ উদ্যোগে একনেক সভায় এটি পাশ করিয়েছি। এটি একটি বড় এবং স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রকল্প, যা দেশের ইতিহাসে আগে কখনো হয়নি। পাকিস্তান আমলের শেষের দিকে যেসব বড় ক্যাম্পাস তৈরি হয়েছিল, তার সঙ্গে এটি তুলনীয়।"
শিক্ষা উপদেষ্টা আরো বলেন, "শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে আমরা পুরোপুরি সচেতন। তারা জানিয়েছে, কেন ক্যাম্পাসের কাজ এতদিনে শেষ হয়নি, জমি অধিগ্রহণ কেন সম্পন্ন হয়নি, এবং প্রজেক্ট ডিরেক্টরের দুর্নীতি সংক্রান্ত অভিযোগও রয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত চালাতে পারে এবং প্রয়োজনে নতুন প্রজেক্ট ডিরেক্টর নিয়োগ দিতে পারে।"
তিনি আরও বলেন, "শিক্ষার্থীরা সেনাবাহিনীর মাধ্যমে ক্যাম্পাস নির্মাণের কাজ বাস্তবায়ন করার দাবি জানিয়েছে। এতে কোনো সমস্যা নেই। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন যদি চায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আমরা সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগের ব্যবস্থা করব।"
জবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এবং দাবিগুলো সম্পর্কে তিনি বলেন, "শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি আমরা সহানুভূতির সাথে মনোযোগ দিয়েছি। অনেক দাবি আমরা মেনে নিয়েছি, এবং শিক্ষার্থীরা আমাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেছে। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে পারব।"
এদিন দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে শিক্ষা উপদেষ্টার কক্ষে এই আলোচনা শুরু হয়, যা প্রায় ৫০ মিনিট ধরে চলে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম, ট্রেজারার অধ্যাপক ড. সাবিনা শারমীন, প্রক্টর ড. তাজাম্মুল হক, অধ্যাপক ড. রইস উদ্দীন এবং দুই ছাত্র প্রতিনিধি তৌসিফ মাহমুদ সোহান ও এ কে এম রাকিব উপস্থিত ছিলেন।
গত সোমবার, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের দাবিতে সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে। তারা ৫টি দাবির পক্ষে সোচ্চার হয়, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য দাবিগুলো ছিল:
স্বৈরাচার আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রজেক্ট ডিরেক্টরকে আইনের আওতায় আনা।
সেনাবাহিনীর দক্ষ অফিসারদের হাতে প্রকল্পের দায়িত্ব অর্পণ।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সুনির্দিষ্ট রূপরেখা সহ ঘোষণা করা যে ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
জমি অধিগ্রহণের বাকি ১১ একর ব্যবস্থা গ্রহণ।
পুরাতন ক্যাম্পাসের স্বৈরাচার সরকারের চুক্তি বাতিল করা।
পরে, বিকেলে শিক্ষা উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ড. এম আমিনুল ইসলাম ও তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জবি শিক্ষার্থীদের ১২ সদস্যের প্রতিনিধি দল। ওই সময় প্রক্টরসহ ৫ জন শিক্ষকও উপস্থিত ছিলেন। সভার পর, উপাচার্য এবং অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সাথে পরবর্তী আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
এসআর
মন্তব্য করুন: