বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের সব বিভাগীয় কার্যালয়ে সঞ্চয়পত্র বিক্রি, প্রাইজবন্ড বিক্রি,
ছেঁড়া–ফাটা নোট বদল, এ–চালান গ্রহণসহ মোট পাঁচ ধরনের সেবা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী রোববার, ২৩ নভেম্বর থেকে এসব সেবা আর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাউন্টারে পাওয়া যাবে না।
প্রথমে শুধু মতিঝিল অফিসে সেবা বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হলেও, দু’দিনের মধ্যে তা দেশের সব বিভাগীয় দপ্তরে সম্প্রসারণ করা হয়। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায়, কেপিআইভুক্ত (Key Point Installation) প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিরাপত্তা জোরদার করতে সাধারণ গ্রাহকদের এসব সেবা আর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র সাঈদা খানম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২০ নভেম্বরের পর থেকে মতিঝিল, চট্টগ্রাম, খুলনা, বগুড়া, রাজশাহী, সিলেট, সদরঘাট, বরিশাল এবং রংপুর অফিসে সঞ্চয়পত্র-পাইজবন্ড বিক্রি ও নোটবদলসহ অন্যান্য সেবা বন্ধ থাকবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাখ্যায় বলা হয়—বিশ্বের কোনো কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরাসরি সাধারণ মানুষের কাছে কাউন্টারে গিয়ে সেবা দেয় না। এসব সেবা বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে দেওয়ার প্রচলন বিশ্বব্যাপী। তাই বাংলাদেশেও ব্যাংকগুলোকে দায়িত্বশীলভাবে এসব কাজ পরিচালনার জন্য তদারকি আরও বাড়ানো হবে।
উল্লেখ্য, গত জুনে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর মতিঝিলের ক্যাশ বিভাগ পরিদর্শন করে বিভাগটি আধুনিকায়নের নির্দেশ দেন। পরে গঠিত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ধাপে ধাপে সাধারণ গ্রাহকদের সেবা বন্ধের উদ্যোগ এগিয়ে নেওয়া হয়। অতীতেও দু’জন গভর্নর একই উদ্যোগ নিয়েছিলেন, তবে সেসময় তা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি।
এ ছাড়া সম্প্রতি মতিঝিল অফিসে সার্ভার জালিয়াতির মাধ্যমে ২৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র আত্মসাতের ঘটনা ধরা পড়ে। আরও কয়েকটি অনিয়মের চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর সেখানে ইতোমধ্যে সঞ্চয়পত্র বিক্রি বন্ধ রয়েছে এবং এ ঘটনায় মামলা ও তদন্ত চলছে।
বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংক ছাড়া সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক, সঞ্চয় অধিদপ্তর এবং ডাকঘর থেকে সঞ্চয়পত্র কেনা যায়। প্রাইজবন্ড ও ছেঁড়া নোট বদলের সুবিধাও সব ব্যাংকে পাওয়া যায়। তবুও নিরাপত্তা ও বিশ্বাসযোগ্যতার কারণে গ্রাহকদের বড় অংশ বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসেই আসতেন। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের পরিমাণ ৩ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি, যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ লেনদেন হয়েছে মতিঝিল কার্যালয়ে।
এসআর
মন্তব্য করুন: