[email protected] রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫
৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

ব্যাংকের অবলোপন নীতিতে নতুন শর্ত: রাইট-অফের ১০ দিন আগে নোটিশ বাধ্যতামূলক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০ নভেম্বর ২০২৫ ১:১৭ এএম

সংগৃহীত ছবি

ব্যাংকের অবলোপন নীতিতে নতুন শর্ত যুক্ত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এখন থেকে কোনো ঋণগ্রহীতার শ্রেণিকৃত মন্দমানের খেলাপি ঋণ অবলোপনের (রাইট-অফ) কমপক্ষে ১০ কার্যদিবস আগে গ্রাহককে লিখিত নোটিশ প্রদান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

বুধবার (১৯ নভেম্বর) এ বিষয়ে একটি নতুন সার্কুলার জারি করে সব তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের তা অবিলম্বে বাস্তবায়নের নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এর আগে ১৯ অক্টোবর জারি করা নির্দেশনায় অবলোপনের ৩০ দিন আগে নোটিশ দেওয়ার কথা ছিল। তবে একটি অবলোপন মামলা নিষ্পত্তিতে দীর্ঘ সময় লাগে—এ যুক্তি দেখিয়েই নোটিশের সময়সীমা কমিয়ে ১০ কার্যদিবস করা হয়েছে বলে জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা।

অবলোপন ও প্রণোদনা নীতিমালা

নতুন সার্কুলারে বলা হয়েছে, প্রতিটি ব্যাংক তাদের নীতিমালা অনুযায়ী অবলোপনকৃত ঋণ পুনরুদ্ধারে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নগদ প্রণোদনা দিতে পারবে। যেসব ব্যাংকের এ ধরনের নীতিমালা নেই, তারা পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন নিয়ে নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করবে।

কোন ঋণ অবলোপনযোগ্য

কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, কোনো গ্রাহকের ঋণ একাধারে মন্দক্ষতিজনক শ্রেণিতে থাকলে তা অবলোপনের যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবে। দীর্ঘদিন ধরে পুনরুদ্ধারযোগ্য নয়—এমন ঋণ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অবলোপনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে গ্রাহক সম্পূর্ণ দায় পরিশোধ না করা পর্যন্ত তাকে খেলাপি হিসেবেই গণ্য করা হবে।

প্রভিশন ছাড়া অবলোপন নয়

মন্দ শ্রেণির কোনো ঋণ অবলোপনের আগে তার বিপরীতে ১০০ শতাংশ প্রভিশন সংরক্ষণ থাকতে হবে। প্রভিশনে ঘাটতি থাকলে তা চলতি বছরের আয় থেকে সমন্বয় করে পূরণ করতে হবে বলেও সার্কুলারে উল্লেখ রয়েছে।

খেলাপি ঋণের বর্তমান চিত্র

বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘আর্থিক স্থিতিশীলতা প্রতিবেদন–২০২৪’ অনুযায়ী দেশে অবলোপনকৃত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।
২০২৫ সালের মার্চ শেষে ব্যাংক খাতে মোট খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ২০ লাখ কোটি টাকা, যার মধ্যে ৩ দশমিক ৪২ লাখ কোটি টাকা মন্দ ও ক্ষতিজনক শ্রেণির—যা মোট খেলাপি ঋণের ৮১ দশমিক ৩৭ শতাংশ।

সার্কুলারে বলা হয়েছে, প্রভিশন সংরক্ষণ নিশ্চিত করার পর ব্যাংকগুলো চাইলে এসব মন্দ ও ক্ষতিজনক ঋণ ব্যালান্স শিট থেকে বাদ দিতে পারবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন নির্দেশনা কার্যকর হলে গ্রাহকরা আগে থেকেই অবলোপন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে পারবেন, একই সঙ্গে ব্যাংকগুলোর রাইট-অফ ব্যবস্থা আরও স্বচ্ছ হবে।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর