বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ, ২০২৫ (বিআরও ২০২৫) অনুযায়ী একীভূতকরণের আওতায় আসা পাঁচটি সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডাররা ক্ষতিপূরণ পাবেন।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বিআরও ২০২৫’-এর ধারা ৪০ অনুযায়ী, যদি কোনো তফশিলি ব্যাংক রেজল্যুশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত লিকুইডেশনের আওতায় আসে এবং শেয়ারহোল্ডাররা সেই প্রক্রিয়ায় লিকুইডেশনের তুলনায় বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হন, তবে তাদের ক্ষতির পার্থক্য অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হবে।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, এই ক্ষতিপূরণের পরিমাণ নির্ধারণ করবেন একটি স্বতন্ত্র পেশাদার মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠান, যাকে বাংলাদেশ ব্যাংক রেজল্যুশন প্রক্রিয়া শেষে নিয়োগ করবে।
এছাড়া সরকার ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী বা শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ রক্ষায় বিশেষ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুসারে, ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ, ২০২৫ আন্তর্জাতিক সর্বোত্তম অনুশীলনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রণয়ন করা হয়েছে।
এতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), বিশ্বব্যাংক এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা (ওইসিডি)-এর প্রযুক্তিগত সহায়তা ও মতামত অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
অধ্যাদেশে রেজল্যুশনের আওতাধীন ব্যাংকের বিভিন্ন দাবিদারের—যেমন আমানতকারী ও শেয়ারহোল্ডারদের—অধিকার সুস্পষ্টভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ‘ইকুয়েটর’-এর পরিচালিত বিশেষ পরিদর্শন ও তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বর্তমানে রেজল্যুশন প্রক্রিয়াধীন ব্যাংকগুলো বিপুল ক্ষতির মুখে রয়েছে এবং তাদের নিট সম্পদমূল্য ঋণাত্মক।
এই প্রেক্ষাপটে ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশের ধারা ৪২ অনুযায়ী গঠিত ব্যাংকিং সেক্টর ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কমিটি (বিসিএমসি) গত ২৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত সভায় সিদ্ধান্ত নেয় যে, একীভূতকরণ প্রক্রিয়ায় এসব ব্যাংকের ক্ষতির ভার শেয়ারহোল্ডারদের বহন করতে হবে।
রেজল্যুশন টুলস ফ্রেমওয়ার্ক অনুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংক বিআরও ২০২৫-এর বিভিন্ন ধারার ভিত্তিতে ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডার, দায়ী ব্যক্তি, অতিরিক্ত টিয়ার–১ ও টিয়ার–২ মূলধনধারীদের ওপর ক্ষতি আরোপ করার ক্ষমতা রাখে।
তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে সাধারণ বিনিয়োগকারী বা শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ সংরক্ষণের সুযোগ সীমিত থাকলেও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদানের বিষয়টি সরকার বিবেচনা করছে বলে জানানো হয়েছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: