[email protected] রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫
৪ কার্তিক ১৪৩২

সারা দেশে ডিম-মুরগি উৎপাদন বন্ধের হুঁশিয়ারি দিল পোলট্রি খাতের উদ্যোক্তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮ অক্টোবর ২০২৫ ৩:২৭ পিএম

সংগৃহীত ছবি

অযৌক্তিকভাবে ফিড, বাচ্চা ও ওষুধের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে সারা দেশে ডিম ও মুরগি উৎপাদন বন্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)।

শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাজধানীর পল্টনের ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন সংগঠনটির নেতারা।

বিপিএ সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন,

“সরকার যদি আমাদের ৭ দফা দাবি মেনে না নেয়, তাহলে প্রান্তিক খামারিরা খামার বন্ধ রাখতে বাধ্য হবেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ডিম ও মুরগির উৎপাদন বন্ধ থাকবে।”

তিনি অভিযোগ করেন, দেশের ডিম ও মুরগির প্রায় ৮০ শতাংশ উৎপাদন করে প্রান্তিক খামারিরা, অথচ নীতিনির্ধারণে তাদের কোনো অংশগ্রহণ নেই। “কিছু বড় করপোরেট কোম্পানি নিজেদের স্বার্থে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে, যার চাপে অসংখ্য ক্ষুদ্র খামারি ইতিমধ্যে ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছেন,” বলেন তিনি।

সুমন হাওলাদার আরও বলেন,

“আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতে একটি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫ টাকায়, মুরগি ৮০–৯০ টাকায়। অথচ বাংলাদেশে ডিমের দাম ১০ টাকা এবং মুরগি ১৫০ থেকে ১৬৫ টাকা। কয়েকটি কোম্পানির মুনাফালোভী আচরণ ও সরকারের কার্যকর তদারকির অভাবেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।”

তিনি উল্লেখ করেন, ২০২৩ সালে ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের গবেষণায় দেখা গেছে—বাংলাদেশে প্রতি কেজি ফিডের দাম স্বাভাবিক মূল্যের চেয়ে ১৫–২০ টাকা বেশি রাখা হচ্ছে। ফলে একটি ব্রয়লার মুরগি উৎপাদনে খরচ দাঁড়াচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬৫ টাকা, অথচ খামারিদের বাধ্য হয়ে ১৩০–১৪০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খন্দকার লিখিত বক্তব্যে সংগঠনটির সাত দফা দাবি তুলে ধরেন—

১️ করপোরেট সিন্ডিকেট ভেঙে ফিড, বাচ্চা, ওষুধ ও ভ্যাকসিনের দাম সরকার নির্ধারণ করবে।
২️করপোরেট প্রভাবমুক্ত ও স্বচ্ছ বাজার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।
৩️ প্রান্তিক খামারিদের প্রতিনিধিদের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
৪️ ফিড, বাচ্চা ও ওষুধের বাজারে নিয়মিত অডিট নিশ্চিত করতে হবে।
৫️উৎপাদন খরচের সঙ্গে ১০% মুনাফা যুক্ত করে ডিম ও মুরগির ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ করতে হবে।
৬️ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের জন্য প্রণোদনা, জামানতবিহীন ঋণ ও ভর্তুকির ব্যবস্থা করতে হবে।
৭️ দুর্নীতিগ্রস্ত ও করপোরেট স্বার্থে কাজ করা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

বিপিএ নেতারা বলেন, সরকার যদি দ্রুত পদক্ষেপ না নেয়, তবে দেশব্যাপী পোলট্রি খামার বন্ধ হয়ে যাবে এবং এতে বাজারে ডিম ও মুরগির তীব্র সংকট তৈরি হতে পারে।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর