ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বার্ষিক সভার সাইডলাইনে একাধিক বৈঠকে অংশ নিয়ে পাচার হওয়া টাকা ফেরাতে এবং চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার কার্যক্রমে সহযোগিতা চেয়েছে বাংলাদেশ।
একই সঙ্গে জলবায়ুর নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় তহবিল বরাদ্দ বাড়ানোর প্রস্তাবও দিয়েছে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে—দেশের স্বার্থবিরোধী কোনো শর্তে আর বৈদেশিক ঋণ গ্রহণ করা হবে না। কারণ, আগের সরকারের রেখে যাওয়া বৈদেশিক মুদ্রা সংকট সফলভাবে মোকাবিলা করে বর্তমানে রিজার্ভে স্থিতিশীলতা ফিরেছে এবং বাজারে ডলারের জোগান বেড়েছে।
গত সোমবার থেকে শুরু হওয়া বৈঠক শনিবার (১৮ অক্টোবর) শেষ হবে। বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলটির নেতৃত্ব দেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। দলে আরও ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ সচিব ও সরকারের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
সূত্র জানায়, মঙ্গলবার (মার্কিন সময়) দুপুরে আইএমএফের সঙ্গে বৈঠকে চলমান ঋণ কর্মসূচির অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে বাংলাদেশ জলবায়ু ক্ষতি মোকাবিলায় বাড়তি অর্থ বরাদ্দ এবং ঋণের শর্ত শিথিল রাখার অনুরোধ জানায়।
আইএমএফ বাংলাদেশের রাজস্ব আহরণ বাড়ানো, সরকারি ঋণের সুদের হার বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য করা এবং জ্বালানি উপকরণের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ রাখার পরামর্শ দিয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার জন্য ২৯ অক্টোবর ঢাকায় আইএমএফ মিশন আসবে, যারা ঋণের ষষ্ঠ কিস্তি ছাড়ের শর্ত বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা করবে।
একই দিনে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে কারিগরি সহায়তা চায়। বিশ্বব্যাংকের তত্ত্বাবধানে থাকা কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থা ইতিমধ্যে এ বিষয়ে সহায়তা দিচ্ছে।
সূত্র জানায়, এসব সংস্থার সহায়তায় পাচার হওয়া অর্থের একটি অংশ শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে, তবে অর্থ ফেরত প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে অতিরিক্ত সহযোগিতা প্রয়োজন।
গত জুলাই থেকে বিশ্বব্যাংক সহজ শর্তের নতুন ঋণ কর্মসূচি চালু করেছে, যার সুদের হার আগের তুলনায় কম। এই কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশ অতিরিক্ত ঋণ সহযোগিতা চেয়েছে।
ওপেক ফান্ডের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশ জ্বালানি আমদানির জন্য ক্রেডিট লাইন বাড়ানোর অনুরোধ জানায়। দেশে জ্বালানি তেলের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় আমদানি ব্যয় বেড়ে গেছে, ফলে এই খাতে ঋণের চাহিদা বেড়েছে।
বহুপাক্ষিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে আলোচনাও চলমান
এ ছাড়া বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল এডিবি, এআইআইবি ও জাইকা’র প্রতিনিধিদের সঙ্গেও একাধিক বৈঠক করেছে। এসব বৈঠকে উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়ন বৃদ্ধি ও চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার কর্মসূচিতে সমর্থন জোরদারের আহ্বান জানানো হয়।
এসআর
মন্তব্য করুন: