[email protected] বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫
১৫ শ্রাবণ ১৪৩২

প্রথমবারের মতো খেলাপি ঋণ ৫ লাখ কোটি টাকা ছাড়াল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৯ জুলাই ২০২৫ ৮:১৮ পিএম

সংগৃহীত ছবি

দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ৫ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য এক গুরুতর সংকেত হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাথমিক হিসাবে দেখা গেছে, ২০২৫ সালের জুন শেষে ব্যাংকিং খাতে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩০ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা, যা বিতরণকৃত মোট ঋণের প্রায় ৩০ শতাংশ।

 

মাত্র তিন মাসে (এপ্রিল–জুন) খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকারও বেশি।
অন্যদিকে, এক বছর আগের (২০২৪ সালের জুন) তুলনায় খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩ লাখ ১৯ হাজার ৩৬ কোটি টাকা, যা ১৫০ দশমিক ৯১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি।
গত মার্চে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ২০ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা, আর ২০২৪ সালের জুনে তা ছিল মাত্র ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯২ কোটি টাকা।

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগে বড় ঋণগ্রহীতারা ‘নীতিগত ছাড়’ নিয়ে পুরোনো খেলাপি ঋণকে ‘নিয়মিত’ দেখিয়ে নতুন ঋণ নিতেন। এতে প্রকৃত খেলাপির চিত্র আড়াল থাকত।
তবে সরকার পরিবর্তনের পর মার্চ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন ঋণ শ্রেণিকরণ নীতি চালু করে, যেখানে নির্ধারিত সময় পার হলেই ঋণ মেয়াদোত্তীর্ণ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। ফলে খেলাপি ঋণের প্রকৃত চিত্র এখন প্রকাশ পাচ্ছে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা, শিল্প খাতের সংকট, উদ্যোক্তাদের দেশত্যাগ বা কারাবরণ, এবং ব্যাংকগুলোর দুর্বল ঋণ আদায় ব্যবস্থাই এ বিপুল ঋণ প্রবৃদ্ধির মূল কারণ।

 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, “খেলাপি ঋণসংক্রান্ত চূড়ান্ত প্রতিবেদন এখনো প্রকাশ হয়নি। প্রতিবেদন তৈরির কাজ চলছে। সঠিক তথ্য দিতে আরও সময় লাগবে।”

বাংলাদেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির এই প্রবণতা দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য এক বড় হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এখনই কঠোর সংস্কার ও কার্যকর তদারকি না হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর