ব্যাংক খাতে এক কোটি টাকার বেশি জমা রয়েছে—এমন হিসাবধারীর সংখ্যা কমেছে ৭১৯টি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনেদেখা গেছে, ২০২৫ সালের মার্চ শেষে কোটিপতি হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২১ হাজার ৩৬২টি, যা ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় কম।
বিশ্লেষকদের মতে, অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে কিছু সাবেক এমপি ও নেতার ব্যাংক হিসাব জব্দ ও তলব করা হয়। এতে উচ্চপর্যায়ের আমানতকারীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয় এবং অনেকে নিরাপত্তার কারণে অর্থ সরিয়ে নেন।
তবে কোটিপতি হিসাবের সংখ্যা কমলেও এসব হিসাবের মোট আমানত বেড়েছে।
ডিসেম্বর শেষে যেখানে কোটিপতি হিসাবগুলোতে মোট জমা ছিল ৭ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা, মার্চ শেষে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭ লাখ ৮৩ হাজার ৬৫৩ কোটি টাকায়—অর্থাৎ তিন মাসে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ হাজার ৬৫৩ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সার্বিকভাবে ব্যাংক খাতে হিসাব ও আমানতের সংখ্যা বেড়েছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত মোট হিসাব বেড়েছে প্রায় ২৪ লাখ ৬০ হাজার এবং আমানত বেড়েছে ৩৯ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কোটিপতি হিসাব মানেই তা ব্যক্তিমালিকানাধীন নয়—এর মধ্যে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও একাধিক হিসাবধারী অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারেন। ফলে এই সংখ্যা কমলেও প্রকৃত ব্যক্তি কোটিপতির সংখ্যা নির্ধারণ কঠিন।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুসারে, ১৯৭২ সালে দেশে মাত্র ৫ জন কোটিপতি হিসাবধারী ছিলেন, যা ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে দাঁড়ায় ১ লাখ ২২ হাজার ৮১-তে। চলতি বছরের মার্চে তা কমে হয় ১ লাখ ২১ হাজার ৩৬২টি।
বিশ্লেষকদের মতে, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও আর্থিক অস্থিরতা কোটিপতি হিসাব কমার একটি কারণ হলেও, সার্বিক আমানত বৃদ্ধির ধারা অর্থনীতিতে আস্থার ইঙ্গিতও দিচ্ছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: