২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে ৩.৯ শতাংশে: এডিবি পূর্বাভাস

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি কমে ৩ দশমিক ৯ শতাংশে নেমে আসবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।

তবে আগামী অর্থবছরে এই হার বেড়ে ৫ দশমিক ১ শতাংশে উন্নীত হতে পারে। আজ বুধবার ঢাকার আগারগাঁওয়ে এডিবির ঢাকা অফিসে প্রকাশিত ‘এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক (এডিও) এপ্রিল ২০২৫’ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, তৈরি পোশাক খাতে রপ্তানি বাড়লেও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি, শিল্প খাতে অস্থিরতা এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে অভ্যন্তরীণ চাহিদা দুর্বল হয়ে পড়েছে, যার ফলে প্রবৃদ্ধির গতি কমেছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ছিল ৪ দশমিক ২ শতাংশ।

বাংলাদেশে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জেয়ং বলেন, “বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনীতি সহনশীল রয়েছে। কাঠামোগত সংস্কার বাস্তবায়নের মাধ্যমে এই সহনশীলতা আরও জোরদার করা সম্ভব।”

তিনি আরও বলেন, তৈরি পোশাকের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে বেসরকারি খাতের বিকাশ, টেকসই অবকাঠামো, জ্বালানি নিরাপত্তা, আর্থিক খাতের সুশাসন এবং বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের মাধ্যমে প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা যেতে পারে।

মূল্যস্ফীতি বিষয়েও শঙ্কা প্রকাশ করে এডিবি জানায়, ২০২৪ অর্থবছরের ৯ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে ২০২৫ অর্থবছরে এটি বেড়ে ১০ দশমিক ২ শতাংশ হতে পারে। এর পেছনে রয়েছে পাইকারি বাজারে প্রতিযোগিতার ঘাটতি, বাজার তথ্যের সংকট, সরবরাহ ব্যবস্থার দুর্বলতা এবং মুদ্রার অবমূল্যায়ন।

তবে আশার বিষয় হলো, বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাস ও রেমিট্যান্স বৃদ্ধির ফলে চলতি হিসাবের ঘাটতি জিডিপির ১ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে কমে শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ হতে পারে। রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি ভোগ ও বিনিয়োগে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে, যদিও কড়াকড়ি আর্থিক নীতি ও বিনিয়োগকারীদের সতর্কতা প্রবৃদ্ধির গতি কিছুটা সীমিত রাখবে।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, আর্থিক ঝুঁকি ও ক্রয়ক্ষমতা হ্রাসের কারণে সেবা খাতের প্রবৃদ্ধি কমতে পারে এবং বন্যার প্রভাবে কৃষি খাতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। তবে রপ্তানি খাতের সহায়তায় শিল্প খাতে কিছুটা গতি আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

উল্লেখ্য, ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এডিবি বর্তমানে ৬৯টি সদস্য দেশের মালিকানাধীন একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান, যা এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করছে।