পবিত্র রমজান মাস ঘিরে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের চাহিদা কয়েকগুণ বেড়ে যায়।
তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বেশ কিছু পণ্যের দাম স্থিতিশীল থাকলেও বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। গত চার মাস ধরে চলা এই সংকট কাটেনি, বরং রমজান সামনে রেখে তা আরও প্রকট হয়েছে।
গত বছরের তুলনায় এবার চিনি, খেজুর, ডাল, পেঁয়াজ ও আলুর দাম তুলনামূলক কম রয়েছে। ব্রয়লার মুরগি, ছোলা, আদা-রসুন, মসলা ও কাঁচা মরিচের মতো পণ্যের দামও স্থিতিশীল বা সামান্য ওঠানামা করছে। বিক্রেতাদের মতে, সরকারের শুল্কছাড় ও পর্যাপ্ত আমদানির ফলে বেশিরভাগ পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে সরবরাহের তুলনায় চাহিদা বেশি থাকায় বেগুন, লেবু, ধনেপাতার মতো কিছু পণ্যের দাম কিছুটা বেড়েছে, যা প্রতি বছরই দেখা যায়।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বোতলজাত সয়াবিন তেল একেবারেই মিলছে না। অনেক দোকানে শুধু পাঁচ লিটারের বোতল পাওয়া গেলেও তার দাম চড়া। খোলা সয়াবিন তেল কিছুটা থাকলেও তা সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। সরকার নির্ধারিত ১৭৫ টাকা লিটারের পরিবর্তে অনেক স্থানে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খোলা সয়াবিন তেল।
বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো রমজানের আগে তেলের সংকট কাটানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন নেই। ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছিল, রমজানের বাজারে চাহিদার তুলনায় বেশি তেল সরবরাহ করা হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে বাজারে তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না।
সয়াবিন তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার একাধিকবার সরবরাহকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। শীর্ষস্থানীয় ভোজ্যতেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, "আমরা বাজারে পর্যাপ্ত তেল সরবরাহ করছি, তবে কিছু পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী তেল মজুত করছেন, যার ফলে সংকট দেখা দিচ্ছে।" অন্যদিকে, অন্যান্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সংকটের কারণ হিসেবে আন্তর্জাতিক বাজারের মূল্যবৃদ্ধির অজুহাত দেখাচ্ছে।
রমজানের বাজারে পণ্যের স্বস্তি থাকলেও বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট ভোক্তাদের জন্য বড় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্রেতারা বলছেন, রমজানের আগ মুহূর্তে তেলের এমন সংকট অস্বাভাবিক এবং বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। সরকারের উচিত দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে বাজারে তেলের স্বাভাবিক সরবরাহ নিশ্চিত করা।
সংকট নিরসনে কী করা যেতে পারে?
বাজারের অন্যান্য পণ্য তুলনামূলক স্বস্তিদায়ক থাকলেও বোতলজাত সয়াবিন তেলের তীব্র সংকট রোজার বাজারে ভোক্তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: