[email protected] শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫
২৮ চৈত্র ১৪৩১

২১ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ নবায়ন

প্রতিদিনের বাংলা ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ৩:০৮ এএম

ফাইল ছবি

ব্যাংক খাতে ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসে ২০ হাজার ৭৩২ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ নবায়ন করেছে অধিকাংশ ব্যাংক।

আগের বছরের একই সময়ে এই পরিমাণ ছিল ১৮ হাজার ৮১০ কোটি টাকা।

তবে ঋণ পুনঃতফশিলের পরও খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমেনি; বরং বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

খেলাপি ঋণের ঊর্ধ্বগতি

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ডিসেম্বরভিত্তিক খেলাপি ঋণের আনুষ্ঠানিক পরিসংখ্যান এখনো প্রকাশ করা হয়নি। তবে অনানুষ্ঠানিক তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এই ঋণের পরিমাণ ৪ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে।

খাতসংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ কম দেখানোর জন্য পূর্ববর্তী সরকারের সময় নীতিমালা সহজ করা হয়েছিল। ঋণ পুনঃতফশিলের শর্ত শিথিল করে পুনঃতফশিল প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ ব্যাংকের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়। এর ফলে বড় অঙ্কের ঋণ নবায়নের সুযোগ তৈরি হয়।

পুনঃতফশিল ঋণের পরিসংখ্যান

২০২৪ সালের প্রথম ৯ মাসে বেসরকারি ব্যাংকগুলো সবচেয়ে বেশি খেলাপি ঋণ নবায়ন করেছে, যার পরিমাণ ১৭ হাজার ৯৬৩ কোটি টাকা। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর পুনঃতফশিল ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা, আর বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো পুনঃতফশিল করেছে ১ হাজার ১২০ কোটি টাকা। তবে বিদেশি ব্যাংকগুলো এ সময় কোনো খেলাপি ঋণ পুনঃতফশিল করেনি।

গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল আমিন মনে করেন, এখন তথ্য লুকানোর সুযোগ নেই, ফলে খেলাপি ঋণের প্রকৃত চিত্র প্রকাশ পাচ্ছে।

এতে ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি বাড়তে পারে এবং বৈদেশিক বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের সাবেক এমডি শফিকুর রহমান বলেন, দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের অবনতি এবং উচ্চ সুদহার, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির কারণে অনেক ব্যবসায়ী ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হচ্ছেন।

তাই ঋণ পুনঃতফশিলের প্রবণতা বেড়েছে।

শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের এমডি মোসলেহ উদ্দীন আহমেদ বলেন, ব্যাংক খাতে পূর্ববর্তী সরকারের লুকানো তথ্য প্রকাশের ফলে খেলাপি ঋণের প্রকৃত পরিমাণ সামনে আসছে।

তিনি আশঙ্কা করেন, খেলাপি ঋণের হার ৩০-৩৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে।

ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ

বিশ্লেষকদের মতে, বারবার ঋণ পুনঃতফশিলের সুযোগ দেওয়া ইতিবাচক ফল আনছে না। বরং নবায়ন করা ঋণগুলো পরবর্তীতে আবার খেলাপি হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সাল পর্যন্ত পুনঃতফশিলকৃত ঋণের মধ্যে ১৮.৭০ শতাংশ ঋণ পুনরায় খেলাপিতে পরিণত হয়েছে।

অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, ঋণ পুনঃতফশিল প্রক্রিয়ায় কড়াকড়ি আরোপ করা না হলে ব্যাংক খাতে আরও বড় সংকট দেখা দিতে পারে।

আপনার সংবাদের সংশোধিত সংস্করণ তৈরি করা হয়েছে। আপনি চাইলে আরও পরিমার্জন বা সংযোজন করতে পারেন।

সূত্র-যুগান্তর 

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর