ভারতীয় নাগরিক ও গভর্নর ড. আতিউর রহমান জড়িত

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির পেছনে ভারতীয় নাগরিকদের সম্পৃক্ততা এবং তৎকালীন গভর্নর ড. আতিউর রহমান জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনা তদন্তে বিভিন্ন অনিয়ম ও তথ্য গোপনের অভিযোগও পাওয়া গেছে।

রিজার্ভ লুটের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন
তদন্তে জানা গেছে, আরটিজিএস সংযোগ স্থাপনের নামে ভারতীয় নাগরিক নীলা ভান্নানকে বাংলাদেশ ব্যাংকে আনা হয়। নীলা ভান্নান সুইফটের সঙ্গে ব্যাংকের ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপন করেন।

এরপর ধাপে ধাপে রিজার্ভ লুটের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়। গভর্নর আতিউরের আস্থাভাজন কয়েকজন কর্মকর্তা এবং দুটি বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ প্রক্রিয়ায় সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।

হ্যাকিং ও তথ্য গোপন
হ্যাকিংয়ের প্রাথমিক ধাপে গভর্নরের পিএস আসাদুজ্জামান একটি ই-মেইল আদান-প্রদানের মাধ্যমে হ্যাকারদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করেন। রিজার্ভ চুরির পর ভারতীয় নাগরিক রাকেশ আস্তানাকে দিয়ে সার্ভারের আলামত মুছে ফেলা হয়। তবে এসব কাজের জন্য কোনো সরকারি অনুমতি বা টেন্ডার প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি।

আন্তর্জাতিক হ্যাকিং চক্র ও অর্থ লুট
২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি, দক্ষিণ কোরিয়ার এক হ্যাকারের মাধ্যমে ফিলিপিন্সের আরসিবি ব্যাংকের ভুয়া অ্যাকাউন্টে ১০১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সরানো হয়। ভুলের কারণে আরও প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার ট্রান্সফার করা সম্ভব হয়নি।

তদন্তে বাধা ও তথ্য গোপন
ঘটনার তদন্তে তৎকালীন গভর্নর আতিউর রহমানের হস্তক্ষেপের কারণে সঠিকভাবে ফরেনসিক পরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি। তদন্তে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের চাপ প্রয়োগ করা হয়, যাতে আতিউর ও তার সহযোগীদের নাম মামলায় অন্তর্ভুক্ত না হয়।

তদন্তের বর্তমান অবস্থা
সিআইডি এবং দুদক তদন্ত করছে। রিজার্ভ লুটে জড়িত দেশি-বিদেশি চক্রের মধ্যে অন্তত ১২-১৩ জন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা এবং দুই ভারতীয় নাগরিকের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। তবে তৎকালীন গভর্নর আতিউর রহমান দেশ ত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে।

দুদক চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, এ ঘটনায় জড়িত সকলের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তদন্তের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় অর্থ লুটের সঙ্গে জড়িতদের মুখোশ উন্মোচন করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।