এশিয়া মহাদেশের সেরা ১০ টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান
আজকের আর্টিকেল থেকে আপনারা এশিয়ার সেরা দশটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জানতে পারবেন। যে সকল প্রতিষ্ঠানগুলো খুবই জনপ্রিয়। আমরা এই সকল প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্য থেকে অনেক রকম সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকি। খুবই জনপ্রিয় যে সকল ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো তার নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ-
- আলিবাবা ডট কম / Alibaba.com (চীন)
- আলী এক্সপ্রেস / AliExpress (চীন)
- যেডি ডটকম / JD.com (চীন)
- ফ্লিপকার্ট / Flipkart (ভারত)
- লাজাদা / Lazada (মালয়েশিয়া)
- শোপি / Shopee (সিঙ্গাপুর)
- রাকুতেন / Rakuten (জাপান)
- তাওবাও / Taobao (চীন)
- তমাল / Tmall (চীন)
- ওয়েইবো / Weibo (চীন)
আলিবাবা ডট কম / Alibaba.com (চীন)
আমরা আলিবাবা নামটির সঙ্গে সকলেই পরিচিত। আলিবাবা ডট কম এটা চীনা একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান। আলিবাবা ডট কম কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৯ সালে জ্যাক মা দ্বারা। আলিবাবা ই কমার্স প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা বিভিন্নজন বিভিন্ন পণ্য ক্রয় করে থাকে। আলিবাবা ডট কম এমন একটি ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম যা ব্যবসায়ীদের পণ্য গুলি বিশ্বব্যাপী বিপ বিক্রয় করতে সক্ষম।
বিশ্বের বৃহত্তম ই-কমার্স এর মধ্যে একটি আলিবাবা ডট কম। বিশ্বের বৃহত্তম এই ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মটি পৃথিবীর প্রায় ১৯০ টির বেশি দেশে ছড়িয়ে রয়েছে। এই প্লাটফর্ম থেকে ক্রেতারা বিভিন্ন ভাবে পণ্য কিনতে পারে। এখান থেকে পণ্যের নাম, ব্র্যান্ড, বৈশিষ্ট্য সবকিছু দেখে নিতে পারে। এছাড়াও বিভিন্ন রকম পণ্য দেখার সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। নিজের পছন্দমত যে কোন পণ্য অর্ডার করে অন্য হাতে পাওয়ার পর পেমেন্ট ব্যবস্থা রয়েছে আবার অন্য অর্ডার দেওয়ার সময় পেমেন্টও করতে পারে।
আলিবাবা ডট কম নিরাপদ এবং বিশ্বস্ত একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান। ক্রেতাদের অর্থ এবং তাদের পণ্যের নিরাপত্তা সম্পর্কে নিশ্চিত করে থাকে আলিবাবা ডট কম। আরে বাবা ডট কম থেকে শুধুমাত্র পণ্য ক্রয়ই নয় এখান থেকে বিভিন্ন রকম কাজ করে ভালো পরিমাণ অর্থ উপার্জন করা সম্ভব। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হিসেবে আপনারা এখানে কাজ করতে পারেন।
আলী এক্সপ্রেস / AliExpress (চীন)
আপনারা হয়তো আলী এক্সপ্রেস এই প্লাটফর্মের সাথেও বেশ পরিচিত। আলিবাবা গ্রুপের একটি অংশ আলী এক্সপ্রেস। এটি একটি চীনা অনলাইন খুচরা বিপণন প্লাটফর্ম। আলী এক্সপ্রেস প্লাটফর্মে চালু হয়েছিল ২০১০ সালে। আলিবাবার মত আলী এক্সপ্রেস ও বিপণন ও বিক্রয় প্ল্যাটফর্ম।
এখানে ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন রকম পণ্য বিশ্বব্যাপী বিস্তৃতি এবং বিক্রয় করতে সক্ষম হয়। ক্রেতারা এখান থেকে নিরাপদ এবং বিশ্বস্ততার সাথে যেকোনো পণ্য ক্রয় করতে পারে। অনলাইনে খুচরা মূল্যে যেকোনো পণ্য ক্রয় করা সম্ভব আলী এক্সপ্রেস থেকে। আলি এক্সপ্রেস প্লাটফর্মে খুবই বেশি পরিচিত। যে কারণে এখান থেকে বিভিন্ন পণ্য ক্রয় বিক্রয় হয়ে থাকে।
যেডি ডটকম / JD.com (চীন)
জেডি ডট কম এটিও একটি চীনা ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম। জেডি ডট কম ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই প্লাটফর্মটি ইলেকট্রনিক্স কমার্স প্ল্যাটফর্ম। এটি চিনির দ্বিতীয় বৃহত্তম অনলাইন খুচরা প্লাটফর্ম। আলিবাবার পরে এই প্লাটফর্মের অবস্থান রয়েছে। আমরা এই প্লাটফর্মের সঙ্গে অনেকে পরিচিত রয়েছি। এখান থেকে ক্রেতারা তাদের পছন্দ অনুযায়ী যেকোনো পণ্য ক্রয় করতে পারেন।
যে সকল পণ্যগুলো ক্রেতারা ক্রয় করতে পারেন তা হলঃ- পোশাক, জুতা, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী, গৃহস্থলী জিনিসপত্র ইত্যাদি। এখান থেকে আপনারা যে কোন জিনিস ক্রয় করলে খুব দ্রুত সময়ে ডেলিভারি পাবেন। এখানে বেশ কয়েক রকম পেমেন্ট প্রক্রিয়া রয়েছে। আপনারা ক্রয় করার সময় বিভিন্নভাবে পেমেন্ট প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবেন।
ঘরে বসে যে কোন পণ্য খুব সহজেই এই প্লাটফর্ম থেকে নিতে পারবেন। জেডি ডট কম একটি জনপ্রিয় ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম যে কারণে চীনের ই-কমার্স বাজারের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ দখল করে রয়েছে এই প্লাটফর্মটি। এই প্লাটফর্মটির সাফল্যের পেছনে রয়েছে বিস্তৃত পণ্য পরিসর, দ্রুত এবং নির্ভরযোগ্য ডেলিভারি, সহজে ব্যবহারযোগ্য ইত্যাদি।
ফ্লিপকার্ট / Flipkart (ভারত)
ফ্লিপকার্ট ভারতের বৃহত্তম ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম। এই প্লাটফর্মটি ২০০৭ সালে শচীন বানসাল এবং বিন্নি বানশাল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এখানে আপনারা যে সকল পণ্যগুলো পাবেন তা হলঃ- পোশাক, জুতা, ইলেকট্রনিক্স, বই, গৃহস্থলের জিনিসপত্র ইত্যাদি ধরনের পণ্য। ব্যাঙ্গালোরে ফ্লিপকার্টের প্রধান কার্যালয় অবস্থিত।
এই ই-কমার্স প্লাটফর্মটি ভারতের ই-কমার্স বাজারে ৬৫% অথবা তারও বেশি স্থান দখল করে রেখেছে। এখান থেকে আপনারা খুবই সহজে যে কোন পণ্য ক্রয় করতে পারেন। এটি একটি বিশ্বস্ত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান। সুতরাং যে কোন পণ্য খুব সহজে ক্রয় করতে পারবেন এবং খুব সহজে পণ্যের পেমেন্ট প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবেন।
এখান থেকে যে কোন পণ্য ক্রয় করলে খুব দ্রুত সময়ে ডেলিভারি পাওয়া যায়। এই প্ল্যাটফর্মটি সাফল্যের পেছনের কারণগুলো বিস্তৃত পরিসর, সহজ ব্যবহারযোগ্য ইন্টারফেস, দ্রুত ও নির্ভরশীল যোগ্য ডেলিভারি এছাড়াও অন্যান্য বিষয় রয়েছে।
লাজাদা / Lazada (মালয়েশিয়া)
আমরা অনেকেই এই ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে পরিচিত। এটা অ্যামাজনের একটি সহায়ক সংস্থা। এই প্লাটফর্মটি যাত্রা শুরু করে ২০১২ সালে। এটি বর্তমানে চীন, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম এ কাজ করে থাকে। এখানে আপনার বিভিন্ন ধরনের পণ্য পেয়ে যাবেন। যে কোন পণ্য খুব সহজেই ক্রয় এবং পেমেন্ট প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবেন।
আপনারা এই ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান থেকে যেমন ধরনের পণ্য পাবেন তা হলঃ- পোশাক, জুতা, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী, গৃহস্থলীর জিনিসপত্র ইত্যাদি। এই ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটি এশিয়ার ই-কমার্স বাজারে শীর্ষস্থানীয় প্ল্যাটফর্ম গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি প্ল্যাটফর্ম। লাজাদা প্ল্যাটফর্মটি খুবই দ্রুত বর্ধনশীল ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম। ২০২৩ সালে তারা আশা করছে ৭০ বিলিয়ন ডলারের বেশি পণ্য বিক্রি করার। যেহেতু এটি বিশ্বস্ত একটি প্ল্যাটফর্ম সুতরাং আপনারা চাইলে যে কোন পণ্য ক্রয় করতে পারেন।
শোপি / Shopee (সিঙ্গাপুর)
শোপি খুবই জনপ্রিয় চীনা একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান বা প্ল্যাটফর্ম। এই প্লাটফর্মটি যাত্রা শুরু করে ২০১০ সালে অর্থাৎ ২০১০ সালের প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই প্লাটফর্মটি পূর্ণ একটি পরিষেবা মূলক প্ল্যাটফর্ম। এখান থেকে আপনারা বিভিন্ন ধরনের পণ্য ক্রয় করতে পারবেন। যেমন, জুতা, ইলেকট্রনিক্স, গৃহস্থলী জিনিসপত্র, পোশাক পরিচ্ছেদ আরও অন্যান্য পূর্ণ রয়েছে। সাংহাইতে শোপি এর কার্যালয় অবস্থিত।
চীনের ই-কমার্স বাজার গুলোর মধ্যে শীর্ষস্থানীয় প্লাটফর্ম গুলোর মধ্যে দখল করে রয়েছে এই প্লাটফর্ম টি। তারা আশাবাদী যে ২০২৩ সালে দুই ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি বিক্রয় করবে তারা। এ থেকে আমরা বুঝতে পারছি কতটা জনপ্রিয় এই প্লাটফর্ম। চীনের ই-কমার্স বাজার গুলোর মধ্যে শীর্ষস্থানীয় প্ল্যাটফর্ম গুলোর মধ্যে একটি হতে চাই এ প্লাটফর্ম। এটি খুবই বিশ্বাসযোগ্য একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান।
রাকুতেন / Rakuten (জাপান)
জাপানের বৃহত্তম ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠান রাকুতেন। এই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৯৭ সালে। আপনারা এখান থেকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য ক্রয় করতে পারবেন। যে সকল পণ্যগুলো ক্রয় করতে পারবেন তা হল, ইলেকট্রনিক্স জাতীয় সকল পণ্য, পোশাক পরিচ্ছেদ, জুতা, গৃহস্থলীর জিনিসপত্র ইত্যাদি। এই প্লাটফর্মের কার্যালয় টোকিওতে অবস্থিত।
তাওবাও / Taobao (চীন)
তাওবাও ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন ২০০৩ সালে। এখান থেকে আপনারা খুচরা মূল্যে যেকোনো পণ্য ক্রয় করতে পারবেন। আপনারা এই প্লাটফর্ম থেকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য খুব সহজেই কিনতে পারবেন। আপনারা এই প্লাটফর্মের যে সকল পণ্যগুলো কিনতে পারবেন তা হল। পোশাক, জুতা, গহনা, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী, আশবাস পত্র আরো অনেক পণ্য রয়েছে।
আপনারা সকল পণ্যগুলো ঘরে বসে খুব সহজেই কিনতে পারবেন। সকল পণ্য সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সেখানে দেওয়া রয়েছে আপনারা সেগুলো দেখে নির্বাচন করে নিজের পছন্দ অনুযায়ী যেকোনো পণ্য ক্রয় করতে পারবেন। আপনারা অনলাইনের মাধ্যমে পেমেন্ট প্রক্রিয়া খুব সহজে সম্পন্ন করতে পারবেন। আপনার পণ্য আপনাকে খুব দ্রুত সময়ে ডেলিভারি প্রদান করবে। এটা খুবই বিশ্বস্ত একটি প্ল্যাটফর্ম বা প্রতিষ্ঠান।
তমাল / Tmall (চীন)
তমাল এটি চীনা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান। তবে এখানে বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের জন্য বেশ সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। এখানে বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা তাদের পণ্যগুলো অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রয় করতে পারবেন। এই প্লাটফর্মটি ব্যবহার করা অত্যন্ত সহজ। এই প্লাটফর্ম এর মাধ্যমে উদ্যোক্তারা তাদের পণ্যগুলো বিভিন্ন দর্শকের কাছে পৌঁছাতে পারে। এভাবে পণ্যগুলো বিস্তৃত করার মাধ্যমে বিক্রয় বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। এখান থেকে আপনারা বিভিন্ন ধরনের পণ্য ক্রয় করতে পারবেন।
ওয়েইবো / Weibo (চীন)
আমরা প্রায় সকলেই ওয়েইবো এই নামটি সঙ্গে পরিচিত। এটা হল একটি চীনা প্ল্যাটফর্ম বা প্রতিষ্ঠান। চীনের একটি জনপ্রিয় সামাজিক মিডিয়া ওয়েইবো। এ প্লাটফর্মটি চালু হয়েছিল ২০০৯ সালে। চীনের দ্বিতীয় বৃহত্তম সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এটি। এটি ১.৫ বিলিয়নেরও বেশি মানুষ ব্যবহার করে থাকেন। এখানে বিভিন্ন ধরনের পোস্ট করা যায় এবং পোস্ট শেয়ার করা যায় এবং অন্যদের সাথে যোগাযোগ করা যায় তার পাশাপাশি পণ্য ও পরিষেবা ক্রয়-বিক্রয় করা যায়।
বর্তমান সময়ে ওয়েইবো একটি জনপ্রিয় ই-কমার্স প্রতিষ্টান। 2021 সালে এই প্লাটফর্মের পন্য ও পরিষেবার বিক্রয়ের পরিমাণ ছিল প্রায় ১.২ ট্রিলিয়ন ইউয়ান। এখান থেকে আমরা বুঝতে পারছি যে এই প্ল্যাটফর্ম কতটা জনপ্রিয়।
মন্তব্য করুন: