দেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প কক্সবাজারের মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র।
এ কেন্দ্রের জন্য উচ্চমূল্যে কয়লা সরবরাহের দায়িত্ব পেয়েছে মেঘনা গ্রুপের ইউনিক সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড এবং ভারতের আদিত্য বিড়লা গ্লোবাল ট্রেডিং কোম্পানি পিটিই-এর (সিঙ্গাপুর নিবন্ধিত) সমন্বিত প্রতিষ্ঠান।
এ প্রতিষ্ঠানকে ৩৫ লাখ মেট্রিক টন কয়লা সরবরাহের কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এই কয়লা ক্রয়ে বাজারমূল্যের চেয়ে বেশি দাম নির্ধারণ করায় সরকারের ক্ষতি হবে ৯১৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকা।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লা অবশ্যই আইসিআই-৩ গ্রেডের হতে হবে। ১৮ অক্টোবর, ২০২৪ তারিখে ইন্দোনেশীয় কয়লা সূচক (আইসিআই) অনুযায়ী এই গ্রেডের কয়লার বাজারদর ছিল প্রতি টন ৭৩.২৫ মার্কিন ডলার এবং এর পরিবহন খরচ ধরা হয় ১০.৮০ ডলার। অর্থাৎ, পরিবহন খরচসহ প্রতি টন কয়লার মোট মূল্য দাঁড়ায় ৮৪.০৫ মার্কিন ডলার। কিন্তু কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি (সিপিজিসিবিএল) এই কয়লার জন্য আদিত্য বিড়লা কনসোর্টিয়ামের কাছে প্রতি টন ১০৫.৮৭ মার্কিন ডলার হারে কার্যাদেশ প্রদান করেছে, যা বাজারমূল্যের তুলনায় ২১.৮২ ডলার বেশি।
এই দরে ৩৫ লাখ টন কয়লা ক্রয়ে সরকারের প্রায় ৯১৬ কোটি টাকার অতিরিক্ত ব্যয় হবে। সিপিজিসিবিএল-এর অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজমুল হক জানিয়েছেন, কয়লার দাম নির্ধারণে বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করা হয়েছে, যার মধ্যে পরিবহন খরচও রয়েছে। তবে এ দরপত্র উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে (ওটিএম) করা হয়েছে, সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) নয়।
২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লা সরবরাহের জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়।
আদিত্য বিড়লা কনসোর্টিয়ামের অর্থনৈতিক প্রস্তাবটি বাজারদরের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি হওয়ায় তা বাতিল করার পরও প্রতিষ্ঠানটির অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুনরায় তাদের পক্ষে কার্যাদেশ জারি করা হয়, যা নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: