আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (আইএমএফ) জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
এপ্রিলে প্রক্ষেপণ করা প্রবৃদ্ধির হার অক্টোবরে এসে আইএমএফ ব্যাপকভাবে কমিয়ে দিয়েছে। বিদায়ী অর্থবছরের পাশাপাশি চলতি অর্থবছরেও প্রবৃদ্ধির হার আরও হ্রাস পাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শুক্রবার প্রকাশিত আইএমএফের ‘রিজিওনাল ইকনোমিক আউটলুক এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চল’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরা হয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের দেশগুলোর জন্য জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং পর্যটন খাতের সংকট উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বাংলাদেশকেও এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ প্রসঙ্গে আইএমএফ উল্লেখ করেছে যে, স্বল্পমেয়াদে অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলাদেশের সম্ভাবনা ছিল ভালো, কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতা সেই সম্ভাবনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এর প্রভাব আগামীতে আরও দৃশ্যমান হবে।
২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য আইএমএফ এপ্রিলে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশ প্রক্ষেপণ করলেও অক্টোবরে তা কমিয়ে ৫.৮ শতাংশ করেছে।
বিদায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্যও প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন এপ্রিলে ৫.৭ শতাংশ থাকলেও অক্টোবরে এসে তা কমে ৫.৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
চলতি অর্থবছরের জন্য প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ছিল ৬.৬ শতাংশ, যা অক্টোবরে এসে ৪.৫ শতাংশ করা হয়েছে, অর্থাৎ ২.১ শতাংশ কমানো হয়েছে। আইএমএফের মতে, দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতা প্রবৃদ্ধি হ্রাসের মূল কারণ।
অপরদিকে, বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হার ৪ শতাংশে নেমে আসতে পারে।
যা দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হারকে উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দিয়েছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) রিপোর্ট অনুযায়ী, এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩.৯১ শতাংশ, যা পূর্ববর্তী প্রান্তিকের তুলনায় কম।
আইএমএফের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রাইমারি ব্যালেন্সের অবস্থান নেতিবাচক থাকবে এবং বৈদেশিক ঋণ পরিস্থিতিতেও চাপে থাকতে হবে।
অন্যদিকে, ভারতের প্রবৃদ্ধি হার স্থিতিশীল রয়েছে ৬.৫ শতাংশে, চীনের প্রবৃদ্ধি ৪.৫ শতাংশ এবং নেপালের প্রবৃদ্ধি কমিয়ে ৪.৯ শতাংশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে মূল্যস্ফীতির বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, এশিয়া অঞ্চলে মূল্যস্ফীতি ২.২ শতাংশে নেমে আসবে এবং আগামী বছরে সামান্য বেড়ে ২.৬ শতাংশ হতে পারে।
তবে বাংলাদেশের জন্য মূল্যস্ফীতি হার এখনও বেশ বেশি, চলতি অর্থবছরে যা ৯.৭ শতাংশে থাকতে পারে এবং বছর শেষে তা ১০ শতাংশেও পৌঁছাতে পারে।
এসআর
মন্তব্য করুন: