[email protected] মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫
৩১ আষাঢ় ১৪৩২

সোহাগ হত্যার প্রতিবাদে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১২ জুলাই ২০২৫ ৫:৩৩ পিএম

সংগৃহীত ছবি

রাজধানীর পুরান ঢাকায় ব্যবসায়ী মো. সোহাগকে প্রকাশ্যে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় দেশজুড়ে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।

হত্যার সুষ্ঠু বিচার এবং চাঁদাবাজি-সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে টানা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা।

 

শনিবার (১২ জুলাই) ঢাকার ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান ফটকে ‘ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষার্থী সমাজ’-এর ব্যানারে বিক্ষোভে অংশ নেন অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী। তারা ‘চাঁদাবাজ চাঁদা তোলে, ইন্টেরিম কী করে?’, ‘কে দিলো রে জানোয়ার মানুষ মারার অধিকার’, ‘জ্বালোরে জ্বালো আগুন জ্বালো’—এই ধরনের স্লোগান দেন।

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় ও ইডেন কলেজের শিক্ষার্থীরাও দুপুর ১২টার দিকে নিজ নিজ ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ করেন।

 

শুক্রবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়ায় বিক্ষোভ মিছিল করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এক শিক্ষার্থী এবি জুবায়ের বলেন, “একজন ব্যবসায়ী চাঁদা দেয়নি বলে তাকে পাথর মেরে হত্যা করা হয়েছে। আমরা কি আবার প্রস্তর যুগে ফিরে যাচ্ছি?” একইসঙ্গে তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি সতর্কবার্তাও উচ্চারণ করেন।

এছাড়াও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি), জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি), জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি), কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে অংশ নেন।

নোবিপ্রবি’র এক শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা চাঁদাবাজ ও খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই। সোহাগ হত্যার ভিডিও আমাদের চোখে ভাসছে, এটা কোনো সভ্য সমাজে হতে পারে না।”

 

কোথাও কোথাও বিক্ষোভকারীরা ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণের পাশাপাশি সড়ক অবরোধ করেন। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ঘুরে ঢাকা–কুয়াকাটা মহাসড়ক ১০ মিনিটের জন্য অবরোধ করেন। মিছিল থেকে দাবি ওঠে: ‘চাঁদাবাজের আস্তানা গুড়িয়ে দাও’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে?’

 

ঘটনার পর যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের একাধিক নেতাকর্মীর সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠে। শুক্রবার সন্ধ্যায় এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে যুবদল ও ছাত্রদলের দুইজন এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের একজনকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।

গত বুধবার (৯ জুলাই) রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের পাশে ব্যবসায়ী সোহাগকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে ও পাথর দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হয়। তাকে বিবস্ত্র করে, মাথা ও শরীরে আঘাত করে হত্যা করা হয়—যার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ও আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এ পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর