[email protected] শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫
২৮ আষাঢ় ১৪৩২

খালেদা জিয়ার কণ্ঠ নকল করে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্র

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৮ জুলাই ২০২৫ ৮:৩৩ এএম

সংগৃহীত ছবি

“আমি খালেদা জিয়া বলছি”— এমন ভুয়া পরিচয়ে কণ্ঠ নকল করে মানুষকে প্রতারিত করে মাত্র ১১ মাসে ২৬ কোটিরও বেশি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র।

ঘটনার মূলহোতা হিসেবে চিহ্নিত মো. মোতাল্লেছ হোসেন এখনও পলাতক।

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ চাঞ্চল্যকর তথ্য।

 ব্যাংক অ্যাকাউন্টে হঠাৎ কোটি কোটি টাকা

বিএফআইইউ-এর তথ্যমতে, ২০২৩ সালের ৫ নভেম্বর থেকে পরবর্তী তিন মাসে মোতাল্লেছের নামে সিটি ব্যাংকের গুলশান শাখায় জমা হয় ৬ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বিএফআইইউকে জানায়।

পরবর্তী অনুসন্ধানে মোতাল্লেছ ও তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ৯টি ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়।
এদের মধ্যে ৭টি অ্যাকাউন্টে মোট ২৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়া যায়। শুধু তিন মাসেই আসে ১১ কোটি ১১ লাখ টাকা।

কিন্তু আয়কর রিটার্ন অনুযায়ী, মোতাল্লেছের ঘোষিত সম্পদ মাত্র ৩৪ লাখ টাকা, যা তার অ্যাকাউন্টে পাওয়া বিপুল অর্থের সঙ্গে কোনোভাবেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

কণ্ঠ নকল করে টাকা আদায়

বিএফআইইউ-এর অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কণ্ঠ নকল করে ফোনে প্রতারণা চালান মোতাল্লেছ ও তার সহযোগীরা। সেই ‘বিশেষ পরিচয়’ দেখিয়ে নানা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করেন তারা।

এই চক্রের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো ভুক্তভোগী মামলা করেননি, যা তদন্তে একধরনের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট সংস্থা।

 পরিবারের এক সদস্য পুলিশ কর্মকর্তা

জানা গেছে, টাকা জমা হওয়া অ্যাকাউন্টগুলোর মধ্যে একটি হিসাবের নমিনি হিসেবে রয়েছেন মোতাল্লেছের চাচাতো ভাই—পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. কাইয়ুমুজ্জামান, যিনি বর্তমানে নৌ পুলিশে কর্মরত।

 অভিযুক্তের দাবি: ‘সবই সাজানো’

এদিকে, অকো-টেক্স লিমিটেড নামক একটি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক পরিচয় দেওয়া মোতাল্লেছ হোসেন গণমাধ্যমে দাবি করেছেন,

“আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ ভুয়া, বানোয়াট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সরকারে উচ্চপর্যায়ের একজন আইন কর্মকর্তা ও বিএফআইইউয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা এই হয়রানির পেছনে রয়েছেন।”


 তদন্ত চলছে, গ্রেপ্তার নেই

বিএফআইইউ রিপোর্ট হাতে আসার পরেও এখনো মোতাল্লেছকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। চক্রটির অন্যান্য সদস্যদের পরিচয় শনাক্ত ও ঘটনার গভীরে যাওয়ার জন্য তদন্ত চলমান রয়েছে।


 

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর