ইরানের সাম্প্রতিক বিজয়ের প্রেক্ষাপটে মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম ও আরব দেশগুলোকে অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলকে স্বীকৃতি না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ।
একইসঙ্গে তারা ফিলিস্তিন, আরাকান ও কাশ্মীরের নিপীড়িত মুসলমানদের মুক্তির লক্ষ্যে মুসলিম দেশগুলোর সম্মিলিত উদ্যোগ গড়ে তোলার আহ্বান জানায়।
শুক্রবার (২৭ জুন) জুমার নামাজের পর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে অনুষ্ঠিত এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এসব আহ্বান জানানো হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দীন। বক্তব্য রাখেন যুগ্ম আহ্বায়ক সাইয়েদ কুতুব, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ, সহকারী সদস্য সচিব জিহাদী ইহসান, মাদ্রাসা-ই-আলিয়া শাখার আহ্বায়ক রাকিব মন্ডল, সদস্য সচিব মো. জিনাত হোসেন এবং কওমি ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র আবদুল হামিদ আস সাফওয়ান।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের আব্দুস সালাম, বায়েজিদ বোস্তামি, তোফায়েল হোসেন, যুদ্ধাহত মো. শফিকুর রহমান, ছাত্র পরিষদের ফজলুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার গোলাম নূর শাফায়েতুল্লাহ, ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আরিফুল ইসলাম, এবং মাদ্রাসা-ই-আলিয়া শাখার আব্দুল্লাহ আল সোহাগ।
মোহাম্মদ শামসুদ্দীন বলেন, “ইসরাইল বিনা উসকানিতে ইরান ও গাজায় হামলা চালিয়ে যুদ্ধাপরাধ করেছে, জেনেভা কনভেনশন লঙ্ঘন করেছে এবং বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা ও মানবাধিকারের জন্য হুমকি তৈরি করেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ইসরাইল ও তার মিত্র যুক্তরাষ্ট্র শুধু সামরিকভাবে নয়, নৈতিকভাবেও পরাজিত হয়েছে।”
তিনি গাজায় গণহত্যার নিন্দা জানিয়ে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের দাবি জানান।
সাইয়েদ কুতুব বলেন, “ইসরাইল আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ইরান, ইয়েমেন ও লেবাননের ওপর হামলা চালিয়েছে। তবে ইরানের পাল্টা প্রতিরোধে ইসরাইল বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে ঠেকাতে নিজেই হামলা চালায়, কিন্তু ইরানের প্রতিক্রিয়ায় দ্রুত যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে বাধ্য হয়। এটা ইরানের কৌশলগত জয়। আমাদের মতে, যুদ্ধবিরতি ঘোষণার আগে গাজা থেকে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার এবং হামলা বন্ধের শর্ত দেওয়া উচিত ছিল।”
আবদুল ওয়াহেদ বলেন, “বিশ্বের নিপীড়িত মুসলিম জনগোষ্ঠীর পক্ষে প্রতি জুমা বায়তুল মোকাররমে আমরা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করে আসছি। আমাদের লক্ষ্য—ফিলিস্তিন, আরাকান ও কাশ্মীরের মুসলমানদের ওপর চলমান মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা। আমরা একটি ‘মুসলিম ইউনিয়ন’ গঠনের মাধ্যমে নির্যাতিত মুসলিম অঞ্চলগুলোর স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই।”
জিহাদী ইহসান বলেন, “ফিলিস্তিন, কাশ্মীর ও আরাকানে সেনাবাহিনীর নির্যাতন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও আইনের চরম লঙ্ঘন। এই প্রতিবাদ শুধু রাজনৈতিক নয়, এটি ঈমানি দায়িত্ব। আমরা বিশ্ব মানবাধিকার সংস্থা, মুসলিম দেশগুলোর নেতৃত্ব ও বিবেকবান মানুষদের প্রতি আহ্বান জানাই—এই নিপীড়িতদের পক্ষে সোচ্চার হোন। প্রতি জুমায় খুতবার মাধ্যমে ফিলিস্তিনের সমর্থনে কথা বলুন।”
এসআর
মন্তব্য করুন: