সাবেক সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল গ্রেপ্তার

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালকে রাজধানীর মগবাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

বুধবার (২৫ জুন) দুপুর ২টার দিকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম।

এর আগে, সাবেক সিইসি কে এম নুরুল হুদার গ্রেপ্তারের পর থেকেই কাজী হাবিবুল আউয়ালের গ্রেপ্তার নিয়ে গুঞ্জন চলছিল। গত ২২ জুন থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খবর ছড়ায় যে, তাকেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আটক করেছে এবং মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে সে সময় ডিবি পুলিশের পক্ষ থেকে বিষয়টি অস্বীকার করা হয়।

ভোট নিয়ে বিতর্কিত অধ্যায়

২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কাজী হাবিবুল আউয়াল প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার নেতৃত্বাধীন কমিশনের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচন নিয়ে দেশজুড়ে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়।

বিরোধী দলসহ বিভিন্ন মহলের অভিযোগ ছিল, ঐ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে প্রহসনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভোটগ্রহণের দিন ভোটার উপস্থিতি নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য দেওয়ার অভিযোগও ওঠে।

নির্বাচনের দিন দুপুর ৩টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণের হার ২৭ দশমিক ১৫ শতাংশ বলা হলেও, মাত্র এক ঘণ্টা পর তা সংশোধন করে ৪০ শতাংশ ঘোষণা করা হয়। সিইসি নিজেই প্রথমে ২৮ শতাংশ বলার পর পরে তা পরিবর্তন করেন।

বিএনপির মামলা ও ধারাবাহিক গ্রেপ্তার

এর আগে রোববার (২২ জুন) বিএনপি ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানায় সাবেক তিন নির্বাচন কমিশনার—কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, কে এম নুরুল হুদা এবং কাজী হাবিবুল আউয়ালের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। মামলাটি করেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। মামলায় ২৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার পরদিনই উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকা থেকে সাবেক সিইসি কে এম নুরুল হুদাকে আটক করে পুলিশ। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, জনতা তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে—গলায় জুতার মালা পরিয়ে এবং জুতা দিয়ে মুখে আঘাত করে। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হেফাজতে নেয় এবং মামলার ভিত্তিতে গ্রেপ্তার দেখায়।

নতুন করে বিতর্কের মুখে নির্বাচন কমিশন

একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। একাধিক সাবেক নির্বাচন কমিশনারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার ও মামলার ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ ছড়িয়েছে।

এ নিয়ে নির্বাচন কমিশন বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য এখনো আসেনি।