পাঠ্যপুস্তকে ‘আদিবাসী’ শব্দসংবলিত গ্রাফিতি রাখা বা বাদ দেওয়া নিয়ে রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ভবনের সামনে দুই পক্ষের কর্মসূচি চলাকালে সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনা ঘটেছে।
এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
আজ বুধবার দুপুরে এনসিটিবি ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
নবম ও দশম শ্রেণির ‘বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি’ বইয়ের পেছনের প্রচ্ছদে ‘আদিবাসী’ শব্দসহ একটি গ্রাফিতি যুক্ত করার পর তা বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে মতবিরোধের জেরে সংঘর্ষের সূত্রপাত।
একদিকে ‘স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি’ নামের একটি সংগঠন পাঠ্যবই থেকে ‘আদিবাসী’ শব্দ বাদ দেওয়ার দাবিতে এনসিটিবি ভবন ঘেরাও করে। অন্যদিকে, ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা’ ব্যানারে একটি দল আগের গ্রাফিতিটি পুনর্বহালের দাবিতে সেখানে অবস্থান নেয়।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রথমে উভয় পক্ষ শান্তিপূর্ণ অবস্থান করলেও, বেলা ১২টার দিকে একে অপরের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে শুরু করে। এরই মধ্যে উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়।
বেলা একটার পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা দাবি করেছে, তাদের ওপর পরিকল্পিত হামলা চালানো হয়েছে। অন্যদিকে স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি বলছে, তারা হামলার শিকার হয়েছে।
ঘটনার পর নয়জন আহত ব্যক্তি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত একজন রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা, যিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সদস্য।
সংঘর্ষ শুরু হলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে উভয় পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে। এনসিটিবি ভবনের সামনে পুলিশ অবস্থান নেয় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরে, যেখানে তারা ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীকে ‘আদিবাসী’ হিসেবে উল্লেখ না করার আহ্বান জানায়। তাদের দাবি, এটি রেসিজম নয় বরং সাংবিধানিক বিষয়।
অন্যদিকে সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা পূর্বের গ্রাফিতিটি পুনর্বহাল করার দাবি জানায় এবং এই সিদ্ধান্তকে আদিবাসীদের প্রতি বৈষম্যমূলক বলে অভিহিত করে।
বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে হামলায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেছে।
বিকেল নাগাদ স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি মতিঝিলের শাপলা চত্বরের দিকে সরে যায়। অন্যদিকে সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দুই পক্ষের দাবি নিয়ে আলোচনা করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন।
এসআর
মন্তব্য করুন: