[email protected] শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫
২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

মা–মেয়েকে হত্যার পর স্কুল ড্রেস পরে বাসা থেকে বেরিয়ে যায় গৃহকর্মী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ১:০৫ এএম

ফাইল ছবি

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডে এক ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

সোমবার সকালে বোরকা পরে বাসায় ঢুকে মা ও মেয়েকে হত্যা করেন সদ্য নিয়োগ পাওয়া গৃহকর্মী, পরে নিহত কিশোরীর স্কুল ড্রেস ও মাস্ক পরে সেখান থেকে বেরিয়ে যান তিনি—এ তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।

নিহত দুজন হলেন— লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তার মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫)। নাফিসা মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী।

তার বাবা এম জেড আজিজুল ইসলাম উত্তরার সানবীমস স্কুলের পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক। পরিবারটি ৩২/২/এ শাজাহান রোডের একটি ভবনের সপ্তম তলায় থাকতেন।

ভবনের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়—

  • সকাল ৭টার দিকে বাবা বাসা থেকে বের হন।
  • ৭টা ৫১ মিনিটে বোরকা পরে বাসায় প্রবেশ করেন গৃহকর্মী, যিনি নিজেকে ‘আয়েশা’ নামে পরিচয় দিয়েছিলেন।
  • প্রায় দেড় ঘণ্টা পর ৯টা ৩৬ মিনিটে তিনি নাফিসার স্কুল ড্রেস পরে বাসা থেকে বেরিয়ে যান এবং একটি রিকশায় উঠে স্থান ত্যাগ করেন।
  • সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আজিজুল ইসলাম বাসায় ফিরে স্ত্রী ও মেয়েকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন।

পুলিশের ধারণা, মাকে হত্যার বিষয়টি টের পেয়ে নাফিসা ডাইনিং রুমের ইন্টারকম থেকে কল দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।

ওই সময় ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। ইন্টারকমের লাইনও বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
বাথরুম থেকে দুটি ধারালো ছুরি- একটি সুইচ গিয়ার চাকু ও একটি ফল কাটার ছুরি—উদ্ধার করেছে পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, এগুলো দিয়েই খুন করা হয়।

আজিজুল ইসলাম জানান, চার দিন আগে দারোয়ানের মাধ্যমে একটি মেয়ে তাদের বাসায় কাজের খোঁজে আসে।

বোরকা পরা মেয়েটি নিজেকে রংপুরের বাসিন্দা আয়েশা বলে পরিচয় দেয়। জানায়, বাবা–মা আগুনে পুড়ে মারা গেছেন এবং জেনেভা ক্যাম্পে আত্মীয়দের সঙ্গে থাকে। তার শরীরেও দগ্ধ হওয়ার দাগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষক আজিজুল।

ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ইবনে মিজান জানান—

  • দুজনের শরীরে একাধিক ছুরিকাঘাতের চিহ্ন ছিল।
  • ঘটনাস্থলে ধস্তাধস্তির স্পষ্ট আলামত পাওয়া গেছে।
  • সিসিটিভিতে একজনকেই দেখা গেলেও আশপাশে অন্য কেউ জড়িত ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
  • অপরাধী হত্যার পর বাসার বাথরুমে ফ্রেশ হয়েছে বলেও প্রাথমিক ধারণা পাওয়া গেছে।

বাসায় তল্লাশি চালিয়ে দেখা গেছে, আলমারি–ব্যাগ তছনছ করা হয়েছে এবং লায়লা আফরোজের মোবাইল ফোন পাওয়া যায়নি।

আরও কিছু খোয়া গেছে কি না—তা তদন্তাধীন।
এ ঘটনায় ভবনের দারোয়ানকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। 

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর