রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় র্যাব পরিচয়ে সংঘটিত এক ডাকাতির ঘটনায় সংঘবদ্ধ চক্রের আট সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির নিউমার্কেট থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন: মো. আল আমিন হাওলাদার, মো. ওমর ফারুক, মো. ফারুক বেপারী, মো. শহিদুল ইসলাম শেখ, মো. মানিক, জহিরুল ইসলাম জহির, আল-আমিন আহম্মেদ ও মো. বারেক।
তাদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস, র্যাবের জ্যাকেট, হাতকড়া, হকিস্টিক, বেতের লাঠি, নগদ ৩০ হাজার টাকা, একটি মোবাইল ফোন ও কিছু প্রসাধনী সামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে।
ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান শনিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিউমার্কেট থানা সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী মো. ফারুক মিয়া (৫৫) গত ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতে দুবাই থেকে ঢাকায় আসেন।
বাসার উদ্দেশে রওনা দেওয়ার সময় তার সঙ্গে প্রায় ১৯ লাখ ৭০ হাজার টাকার মূল্যবান সামগ্রী ছিল, যার মধ্যে স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, আইপ্যাডসহ অন্যান্য জিনিসপত্র অন্তর্ভুক্ত ছিল।
রাত ৩টার দিকে তার গাড়ির পথরোধ করে র্যাবের পোশাক পরিহিত ৫-৬ জন ব্যক্তি তাকে জোরপূর্বক নামিয়ে মালামাল ছিনিয়ে নেয়। এরপর তাকে বিভিন্ন স্থানে ঘোরানোর পাশাপাশি শারীরিক নির্যাতন ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়।
পরে ভোরে হাতিরঝিলে ফেলে রেখে তারা পালিয়ে যায়।
ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে নিউমার্কেট থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়, যার পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ২৩ ফেব্রুয়ারি নিউমার্কেট এলাকা থেকে প্রথমে মানিককে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২৮ ফেব্রুয়ারি পটুয়াখালীর বাউফল ও বরিশালে অভিযান চালিয়ে আল আমিন হাওলাদার ও ওমর ফারুককে আটক করা হয়।
এরপর তাদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ২ মার্চ ঢাকার রামপুরা এলাকা থেকে মো. ফারুক বেপারী ও মো. শহিদুল ইসলাম শেখ, ৭ মার্চ বংশাল, দক্ষিণখান ও সবুজবাগ এলাকা থেকে জহিরুল ইসলাম জহির, আল-আমিন আহম্মেদ ও মো. বারেককে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশের তথ্যমতে, গ্রেপ্তারকৃতরা সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সদস্য। তারা বিদেশফেরত যাত্রীদের অনুসরণ করে সুবিধাজনক স্থানে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে সর্বস্ব লুট করে নেয়। এ পর্যন্ত তারা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ১২-১৩টি ডাকাতির সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে, যার মধ্যে ছিনতাই, ডাকাতি, চুরি, ধর্ষণ, অস্ত্র আইন ও মাদকের অভিযোগ অন্তর্ভুক্ত।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং ডাকাতির ঘটনায় লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধারের পাশাপাশি পলাতক অন্যান্য সদস্যদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: