[email protected] মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫
৮ বৈশাখ ১৪৩২

ভন্ড পীরের কারিশমা

যমুনা গ্রুপের জিএমকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ফাঁসিতে ঝুলানোর হুমকি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ৭:০৬ পিএম

ফাইল ছবি

বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে হামলা চালানোর অভিযোগ তোলে ট্রাইব্যুনালে মামলা দিয়ে ফাঁসিতে ঝুলানো হবে বলে হুমকি দিয়ে ট্রাইব্যুনালের মামলা হয়েছে সংক্রান্ত একটি হাতে লেখা কাগজ পাঠানো হয়।

এ ছাড়া গত ১৯ জুলাই বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়েছে যমুনা গ্রুপের জেনারেল ম্যানেজার জিয়া উদ্দিন ‍রিপনকে কাফরুল থানায় ২০২৪ সালের ১০ ডিসেম্বর দায়ের করা ১০ লাখ টাকা দিলে মামলা মিমাংসা করবে বলে আইনজীবী মারফত বলা হয়।

পরিবারের দাবি বাড়ী নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে এই মামলার নেপথ্যে মিরপুরের ভন্ড পীর সৈয়দ এম সাইদুর রহমান আল মাহবুবী। এর মধ্যে বৈষম্য বিরোধী মামলায় বিচারিক আদালতে নয়বার জামিন আবেদনের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সেখানে আবেদনের শুনানি হলেও আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেরননি।কিন্তু নেপথ্যে থাকা মিরপুরের ভন্ড পীরের লোকেরা বলা বলি করছে জজ কোর্ট, পিপি জিপি, সুপ্রিম কোর্ট এবং অ্যাটর্নি কার্যালয়ের সবাই তাদের লোকজন। সেখানে জামিন আবেদন করে কোন লাভ হবে না।

সোমবার(২৪ ফেব্রুয়ারি)দুপুরে ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোশিয়েশন(ক্র্যাব) ভন্ডপীর সৈয়দ এম মাহবুবী কর্তৃক আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সহ থানায় মিথ্যা মামলা থেকে প্রতিকারের দাবিতে পরিবারের পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন মিথ্যা মামলার আসামীর স্ত্রী শারমিন জাহান।

তিনি জানান, কৌশলে পুরো বাড়ী দখল করতে না পেরে যমুনা গ্রুপের জেনারেল ম্যানেজার আর(জিএম)সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং পদে কর্মরত মিরপুরের বাসিন্দা জিয়া উদ্দিন ‍রিপনকে প্রধান আসামী করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় হামলা চালিয়ে ভিকটিমকে আহত করা হয়েছে অভিযোগ তোলে দায়ের করা মামলায় প্রধান আসামী করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমি শারমিন জাহান, স্বামী -এমডি জিয়াউদ্দিন রিপন, বাসা নং-১৯, রোড-৭/২, ব্লক-সি, সেকশন-৬, থানা- পল্লবী, মিরপুর, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন।এ মর্মে বলছি যে, আমার স্বামী এমডি জিয়াউদ্দিন রিপন একজন অরাজনৈতিক ব্যক্তি, কখনোই কোন রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন না। আমার স্বামী বাংলাদেশের স্বনামধন্য শীর্ষ গ্রুপ অব কোম্পানী যমুনা গ্রুপের অন্যতম অঙ্গপ্রতিষ্ঠান যমুনা ইলেকট্রনিক্স এন্ড অটোমোবাইলস লিঃ এর সিনিয়র জিএম (কর্পোরেট সেলস) পদে দীর্ঘদিন যাবৎ সুনামের সাথে কর্মরত আছেন, যার উপর অর্পিত আছে ওই কোম্পানীর বাৎসরিক প্রায় ১০০ কোটি টাকার ব্যবসা।

তিনি কোম্পানী নির্ধারিত সকাল ৯.০০ টা থেকে সন্ধ্যা ৬.০০ টা পর্যন্ত চাকুরীর শর্ত মোতাবেক কোম্পানীর হেড অফিসে তাকে উপস্থিত থাকতে হয় এবং প্রতিদিনের কর্ম শেষে নিয়মিত রাত্র অনুমান ৮.০০ টা নাগাদ তিনি বাসায় ফিরে আসেন।

প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ, প্রতিদিনের ন্যায় গত-১৯ ডিসেম্বর তিনি যথারীতি বাসায় ফিরেন, একমাত্র সন্তান আনাহিতা মনিকে (বয়স ৩ বছর) নিয়ে খুঁনসুটি করে ঘুম পারিয়ে দেন। ওই দিন অর্থাৎ গত-১৯ ডিসেম্বর দিবাগত রাত দেড়টার ১.৩০ দিকে হঠাৎ কিছু পুলিশ ভন্ড পীরের কিছু লোকজন সাথে নিয়ে আমার স্বামীকে উঠিয়ে নিয়ে যায়। পরে কাফরুল থানায় গিয়ে জানতে পারি ২০২0 সালের ১৯ জুলাই ঘটনাকে কেন্দ্র করে একজন ভুক্তভোগীকে দিয়ে আমার স্বামীকে ১ নং আসামী করে আরো ৭ জনকে এজাহারভুক্ত আসামী করে সাথে ১০০-১৫০ অজ্ঞাতনামা আসামী করে গত-১০ ডিসেম্বর কাফরুল থানার মামলা নং-০৯(১২)২৪. ধারা-১৪৭/১৪৮/১৪৯/৩২৬/৩০৭/১০৯/৩৪ দন্ডবিধি দায়ের করে। আমরা পরের দিন আদালতে জামিনের জন্য গেলে প্রকৃত ঘটনা জানতে পারি।

প্রকৃত ঘটনাঃ

আমার স্বামীর পারিবারিক সম্পত্তি মিরপুর ৬ নং -এ ব্লক সি,রোড নং-৭/২ - এ আপাতত একটি বিল্ডিং পীর সাহেব জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা করেন। এ বিষয়ে ঢাকার ১ম সহকারী জজ আদালতে একটি দেওয়ানী মামলা-১৬৩/২৪ বিচারাধীন আছে।

তা স্বত্ত্বেও গত ২৯নভেম্বর মিরপুর আর্মি ক্যাম্পের তার (স্বামীর) পরিচিত এক সেনা কর্মকর্তার মাধ্যমে আমার স্বামীকে ডেকে নেওয়া হয়। যেহেতু দেওয়ানী মামলা চলমান আছে সেই কারণে তারা এ বিষয়ে আর কোন কথা বাড়ায় নি। কিন্তু তার পরে আমার স্বামীর বিরুদ্ধে আগের ১৯ জুলাই (শুক্রবারের) ঘটনা উল্লেখ করে গত-১০ ডিসেম্বর মামলা দায়ের করা হয়। এর পরে ১৯ডিসেম্বর গ্রেফতার করে কাফরুল থানা পুলিশ। এ পর্যন্ত অনেকবার জামিন শুনানী করেছে কিন্তু কোন লাভ হয় নি।

ইতিমধ্যে বিভিন্নভাবে, বিভিন্ন লোক মারফত আমাদের জানানো হয়েছে যে কোনভাবেই আমার স্বামী জামিন পাবে না।কারণ,ভন্ড পীর সৈয়দ এম সাইদুর রহমান আল মাহবুবীর হাত অনেক লম্বা, যে ইতিপূর্বে বিতর্কিত দেওয়ানবাগী পীর সাহেবের ক্যাশিয়ার ছিল; তার পক্ষ থেকে জনানো হয় যে সিএমএম কোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্ট, এমনকি অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় পর্যন্ত তাদের লোক রয়েছে যাতে আমার স্বামীর জামিন না হয়।

এমনকি বলা হয়েছে যদি আমার স্বামী যদি তার পৈত্রিত সম্পত্তি নিয়ে ঐ ভন্ড পীরকে বুঝিয়ে না ছেড়ে দেয় তাহলে সে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলায় আসামী করে ফাঁশিতে ঝুলাবে। ইতিমধ্যে তারই ধারাবাহিকতায় আমাদের অজান্তে এবং কোন অনুমতি না নিয়ে মহামান্য হাইকোর্টে এক বেঞ্চ থেকে আরেক বেঞ্চে আমার স্বামীর জামিনের আবেদন করে যাচ্ছেন এবং আমাদের জানানো হয়েছে যে গত-১৬ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আন্তর্জাতিক অপরাধ মামলা নং ১৬ দায়ের করা হযেছে।

এখনো যদি আমরা ভন্ড পীরের কথায় রাজি হই তাহলে তিনি আনÍর্জাতিক অপরাধ ট্রাই্যুনালসহ অন্যান্য মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার বন্দ্যোবস্ত করবেন, অন্যথায় আমার স্বামীকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলায় ফাঁশিতে ঝুলিয়ে মারার ব্যবস্থা করবেন বলে জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমি একজন কম বয়সী নারী সেই সাথে ৩ বছরের একটি কন্যা সন্তান নিয়ে এই ভন্ড পীরের লোকজনের ভয়ে আমার বাবার বাড়ীতে বসবাস করছি।

এই ভন্ড পীর তার নেটওয়ার্ক মাধ্যমে আমার স্বামী সম্পর্কে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে জেল-হাজতে রেখেছে, যেখান থেকে জামিনের ব্যবস্থা করতে পারছি না, অন্যদিকে আরো মামলা মোকদ্দমা ও জীবনের ভয়-ভীতি, হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছে।

আমরা হুমকি-দুমকির ভয়ে এক মাসের বেশি সময় ধরে নিজের বাসা ছেড়ে অন্যত্র বসবাস করছি।

কোন উপায়ন্তর না পেয়ে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছি। 

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর