সরকারবিরোধীদের দমন এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপূরণে অতীতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ব্যবহারের অভিযোগ পুরনো।
তবে এবার খোদ দুদকের সাবেক চেয়ারম্যান, কমিশনার এবং কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অর্থপাচার এবং ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠেছে।
দুদকের সদ্য সাবেক কমিশনার জহুরুল হকের বিরুদ্ধে বিপুল অর্থপাচারের অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, বিটিআরসি এবং দুদকে কর্মরত থাকার সময় তিনি দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ বিদেশে পাচার করেছেন। তাঁর মেয়ে বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করছেন, যেখানে এসব অর্থ পাচার করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
কমিশনার আছিয়া বেগমের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তাঁর স্বামী বিপুল অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন, এবং আছিয়া বেগম নিজেও প্রভাব খাটিয়ে প্রশ্নফাঁসসহ একাধিক দুর্নীতি ঢেকে রেখেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সাবেক কমিশনাররা সিন্ডিকেট তৈরি করে ঘুষের বিনিময়ে ব্যবসায়ী এবং রাজনীতিকদের হয়রানি করেছেন। বিশেষ করে কমিশনার জহুরুল হক রাজউকের প্লট বরাদ্দসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার প্রভাব খাটিয়েছেন। তিনি এবং তাঁর স্ত্রী পৃথকভাবে প্লট বরাদ্দ নিয়ে আইন ভঙ্গ করেছেন, যা ফৌজদারি অপরাধের শামিল।
জানা গেছে, জহুরুল হক ধানমণ্ডির সরকারি বাসায় বসবাস করলেও অতিরিক্ত একটি সরকারি গাড়ি নিজের ও পরিবারের জন্য ব্যবহার করতেন। এমনকি চালকসহ গাড়ি বরাদ্দে তিনি নিয়মবহির্ভূত অনুমোদন নেন, যা দুদকের ভেতরে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
দুদক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো সাবেক কমিশনারের দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত শুরু হয়েছে। দুদক উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার এবং সুপ্রিম কোর্টের একজন প্রভাবশালী আইনজীবী খুরশীদ আলমের নামও এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অভিযোগগুলো যাচাই-বাছাই করে সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে। পাশাপাশি অভিযুক্ত সাবেক কমিশনারদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা উচিত।
দুর্নীতির এমন অভিযোগ দুদকের ভাবমূর্তিতে বড় আঘাত হেনেছে। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া এখন সময়ের দাবি।
এসআর
মন্তব্য করুন: