[email protected] মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৫
১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

‘আমরা কোথায় কীভাবে থাকব আল্লাহই ভালো জানেন’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১ ডিসেম্বর ২০২৫ ১০:৫৫ পিএম

গাজীপুরের কালিয়াকৈর পৌরসভার চান্দরা পল্লীবিদ্যুৎ

দিঘিরপাড় এলাকায় একটি টিনশেড কলোনিতে হঠাৎ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মুহূর্তেই সর্বস্ব হারিয়েছেন অসংখ্য পরিবার।
সোমবার (১ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে হঠাৎ দেখা যায় কালো ধোঁয়া আর পোড়া গন্ধ। কয়েক মিনিটের মধ্যেই আগুন দাউ দাউ করে ছড়িয়ে পড়ে সারিবদ্ধ কক্ষগুলোয়। তখনো অনেকেই কর্মস্থলে, কেউবা ঘর ছেড়ে সদ্য বের হয়েছেন।

শিক্ষার্থী সুমাইয়া ঠিক সেই সময় বইপত্র নিয়ে স্কুলে যাচ্ছিল। নিজের ঘরে আগুন ধরে যেতে দেখেই চিৎকার করে ওঠে সে। চোখের সামনে সবকিছু পুড়ে যেতে থাকলেও কিছুই করার ছিল না তার। মুহূর্তেই প্রায় ৮০টি কক্ষে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

খবর পেয়ে কালিয়াকৈর ওয়্যারহাউস স্টেশন থেকে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। প্রায় দেড় ঘণ্টা প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে; কিন্তু ততক্ষণে বাসিন্দাদের সমস্ত জিনিসপত্র ছাই হয়ে যায়।

অফিস থেকে ফিরে সবকিছু পুড়ে যেতে দেখে হতবিহ্বল হয়ে পড়েন বাসিন্দা সুমন মিয়া। তিনি বলেন,
‘স্ত্রী ফোন দিয়া বলল—সব পুইড়া গেছে। দৌড়াইয়া আইসা দেখি সত্যিই শেষ। কিস্তিতে নেয়া ফ্রিজ, নতুন কিনা চাউলের বস্তা—কিছুই বাঁচাইতে পারলাম না।’

পোশাক শ্রমিক সাবিনা ইয়াসমিন বলেন,
‘দুপুরে খাওয়ার জন্য রান্না কইরা ঘর লক দিয়া অফিসে গেছি। অফিসেই জানলাম আগুন লাগছে। ছুটে আইসা দেখি ঘরের শুধু খুঁটি দাঁড়িয়ে আছে। এখন এত মানুষ কোথায় থাকব—এটা আল্লাহই জানেন।’

আরেক বাসিন্দা আসমা আক্তার বলেন,
‘কষ্ট কইরা কিছু জিনিসপত্র করছিলাম। কিন্তু কিছুই আর রইল না। পোড়া জিনিস ঘেঁটে দেখলাম, বাঁচানোর মতো কিছুই নেই। রাইতে কোথায় থাকব—ভাবতেই ভয় লাগছে।’

কলোনির মালিক বায়জিদ হোসেন জানান, পুরো কলোনিই পুড়ে গেছে, ভাড়াটিয়াদের ক্ষতিও অনেক। তবে কেউ আহত না হওয়ায় তিনি স্বস্তি প্রকাশ করেন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।

কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএইচএম ফখরুল হোসাইন জানিয়েছেন,
অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য তিনবেলা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিটি পরিবারকে প্রাথমিক সহায়তা হিসেবে দুটি করে কম্বল দেওয়া হচ্ছে।

 

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর