[email protected] বৃহঃস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫
১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

কড়াইল বস্তিতে কেন বারবার আগুন?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৬ নভেম্বর ২০২৫ ১১:৩৪ পিএম

কড়াইল বস্তিতে বারবার আগুন লাগার কারণ


১. ঘন ও অস্থায়ী বসতিগঠন

টিন, বাঁশ, কাঠ, কার্ডবোর্ডের ঘর খুব ঘনভাবে তৈরি।

ঘরগুলোর মধ্যবর্তী দূরত্ব কম, আগুন দ্রুত ছড়ায়।

২. অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ

ঝুলন্ত, নিম্নমানের তার।

অতিরিক্ত লোড ও শর্ট সার্কিটের সম্ভাবনা বেশি।

৩. গ্যাস সিলিন্ডারের ঝুঁকি

বাড়ির প্রায় ৭০% গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার।

লিকেজ, নিম্নমানের রেগুলেটর বা চুলার সমস্যা বিস্ফোরণের কারণ।

৪. পানি ও জরুরি সেবার অভাব

সরু গলি, ভাঙাচোরা রাস্তা।

ফায়ার সার্ভিসের বড় ট্রাক প্রবেশে সমস্যা।

হোস পাইপ ফেটে যায়, পানি সরবরাহ ব্যাহত।

৫. দখলদারিত্ব ও রাজনৈতিক প্রভাব

জমি সরকারি হলেও রাজনৈতিক সংঘর্ষ ও আধিপত্য বিস্তার।

কিছু ভুক্তভোগীর দাবি, আগুনে কারও লাভ হতে পারে।


৬. সরকারি তদারকি ও পরিকল্পনার অভাব

সাবস্টেশন, ড্রেনেজ, ফায়ার হাইড্রেন্ট নেই।

ঘনত্ব বেড়েছে, জীবনমান বেড়েছে না।

৭. প্রাথমিক প্রতিরোধ ও সচেতনতার সীমাবদ্ধতা

আগুন দ্রুত ছড়ায়, প্রাথমিক শনাক্তকরণ সম্ভব নয়।

দিনের সময় বাসিন্দা কম থাকে, রাতে রান্নার সময় বেশি আগুন লাগে।

৮. অপরাধ বা নাশকতার সম্ভাবনা

রাজনৈতিক বা স্বার্থসংশ্লিষ্ট কারণে আগুন লাগানো হতে পারে।

তদন্তে প্রমাণ পাওয়া কঠিন।

প্রভাব

প্রায় ১২০০ ঘর পুড়ে গেছে।

পরিবারে মানুষের জীবন, শিক্ষাপ্রাপ্তি, কর্মসংস্থান, এবং সামর্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত।

আগুনের পর বাসিন্দারা সম্পূর্ণ নিঃস্ব, দিনের শেষে নতুন করে শুরু করতে হয়।

সমাধানের প্রস্তাবনা

১. সরু পথ প্রশস্ত করা।


২. বস্তিতে ফায়ার হাইড্রেন্ট স্থাপন।


৩. অভিজ্ঞ ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের স্থায়ী মোতায়েন।


৪. বৈদ্যুতিক ও গ্যাস সংযোগ নিয়মিত পরিদর্শন।


৫. সচেতনতা কার্যক্রম ও মহড়া।

সারসংক্ষেপে, কড়াইল বস্তির বারবার আগুন লাগার মূল কারণ হলো ঘনবসতি, দাহ্য বস্তু, অবৈধ বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ, পানি অভাব এবং প্রশাসনিক তদারকির অভাব। রাজনৈতিক বা স্বার্থ-নির্ধারিত আগুন লাগানোর সম্ভাবনাকেও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

 

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর