[email protected] বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫
১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

মাসের পর মাসের চেষ্টায় জমেছিল দেড় লাখ টাকা, আগুনে সব শেষ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৬ নভেম্বর ২০২৫ ১২:৪৮ পিএম

রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে মঙ্গলবার বিকেলের ভয়াবহ

আগুনে শুধু ঘরবাড়িই নয়, এক দোকানকর্মীর বহু দিনের পরিশ্রমে জমানো সঞ্চয়ও ছাই হয়ে গেছে। ফারুক হোসেন নামের ওই যুবক নিজের টিনের বাক্সে ঘর মেরামতের জন্য দেড় লাখ টাকা জমিয়েছিলেন—আগুনে সবকিছু পুড়ে অদৃশ্য হয়ে গেছে।

বুধবার সকালে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ফারুক হাঁটু গেড়ে ভস্মস্তূপে হাতড়ে বেড়াচ্ছেন। তার আশা ছিল, অন্তত একটি নোট হয়তো অক্ষত পাওয়া যাবে। প্রায় দেড় ঘণ্টার অনুসন্ধানের পর তিনি নিজের পোড়া টিনের কৌটায় পৌঁছান। কিন্তু সেখানে পাওয়া যায় শুধু কয়লায় পরিণত কাগজের অংশ আর আধপোড়া কিছু নোটের টুকরো।

ফারুক হোসেন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “মাসের পর মাস না খেয়ে, কষ্ট করে দেড় লাখ টাকা জমিয়েছিলাম। আগুন লাগার খবর পেয়ে দৌড়ে এলাম, কিন্তু ঘরে ঢোকার সুযোগ পেলাম না। সবকিছু আমার চোখের সামনে শেষ হয়ে গেল। এখন গায়ের কাপড় ছাড়া কিছুই নেই।”

আগুনের সময় ফারুকের মা খোদেজা বেগমও ঘরে ছিলেন না। তিনিও অসহায় ভঙ্গিতে বলেন, “আমাদের সব শেষ। মানুষের বাড়িতে কাজ করে যেটুকু করে ঘরটা সাজিয়েছিলাম, তা-ও নেই। ছেলের জমানো টাকাই ছিল ভরসা—তাও পুড়ে গেছে।”

আগুন পুরোপুরি নেভানোর পরও বুধবার এলাকায় সতর্ক অবস্থানে ছিল ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। ধ্বংসস্তূপের ভেতরে চাপা ধোঁয়া বা ছাই থেকে যেন নতুন করে আগুন না জ্বলে ওঠে—সেই সতর্কতাই নিচ্ছিলেন তারা। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ডেসকো কর্মকর্তারাও কাজ করছিলেন।

ফায়ার সার্ভিসের তথ্যমতে, মঙ্গলবার বিকেল ৫টা ২২ মিনিটে বৌবাজার এলাকায় একটি ঘর থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। বস্তির ঘিঞ্জি পরিবেশ ও শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে দাউ দাউ করে আগুন দ্রুত শতাধিক ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে মোট ১৯টি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়; তবে সংকীর্ণ পথ ও পানির ঘাটতির কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ সমস্যা হয়। লেক থেকে পাইপ টেনে পানি এনে পাঁচ ঘণ্টার চেষ্টার পর রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে।

 

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর