বগুড়ার ধুনট উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের কাশিয়াহাটা গ্রামের
উত্তরপাড়ায় এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে চার পরিবারের ঘরবাড়ি ও সমস্ত মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তের মধ্যেই আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে, চারপাশে আতঙ্ক আর চিৎকারে পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে।
ক্ষতিগ্রস্ত চার পরিবারই মৃত আবুল হোসেন সরকারের সন্তান—তিন ছেলে শহিদুল ইসলাম, মাসুদ রানা, সুইট রানা এবং তাদের বোন রিনা পারভিন। আলাদা ঘরে থাকলেও আগুনের প্রচণ্ড তাপে কোনো ঘরই রক্ষা পায়নি। চারটি ঘর সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়। আগুনে প্রায় দুই লাখ টাকার বেশি নগদ অর্থ, দুইটি ফ্রিজ, টিভি, আলমারি, কাপড়সহ মূল্যবান আসবাবপত্র পোড়ে যায়।
ব্যবসার উদ্দেশ্যে জমি বিক্রি করে মাত্র দুই দিন আগে টাকা পেয়েছিলেন সুইট রানা। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, “আগামীকাল ঢাকায় যাওয়ার কথা ছিল। নতুন করে ব্যবসা শুরু করব ভেবেছিলাম। সবই শেষ হয়ে গেল। এখন কিছুই হাতে নেই।”
রিনা পারভিনের ঘর থেকেও প্রায় এক লাখ টাকার বেশি নগদ অর্থ ও বাড়ি নির্মাণ সামগ্রী পুড়ে যায়। আগুনের তীব্রতার কারণে পরিবারগুলো ঘর থেকে একটি জিনিসও বের করতে পারেনি।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় শিক্ষক নুরুল আমিন ও ওমর ফারুক জানান, ফায়ার সার্ভিস কিছুটা আগে এলে ক্ষতি এত বড় হতো না। আগুন এত দ্রুত ছড়িয়েছিল যে কেউ কিছু বাঁচানোর সুযোগ পাননি।
ধুনট ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটটি ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ১৫-১৬ কিলোমিটার দূরে থাকায় সেখানে পৌঁছাতে সময় লাগে। ভারপ্রাপ্ত স্টেশন অফিসার মাসুদ রানা জানান, “আমরা পৌঁছে আগুনের বিস্তার ঠেকাতে সক্ষম হই, কিন্তু তার আগেই সবকিছু পুড়ে যায়। সৌভাগ্যক্রমে কেউ আহত হয়নি।”
ফায়ার সার্ভিসের হিসাব অনুযায়ী ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা। চার পরিবার এখন পুরোপুরি নিঃস্ব—ঘর নেই, পোশাক নেই, সঞ্চয় নেই—ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন তারা।
ক্ষতিগ্রস্তরা স্থানীয় প্রশাসন এবং সমাজের বিত্তবানদের দ্রুত সহযোগিতা কামনা করেছেন।
এসআর
মন্তব্য করুন: